ডা. রাজুর শাস্তির দাবিতে আবারও রাস্তায় রাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা :৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম

রাবি প্রতিনিধি : 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষিকার ১৩ বছরের শিশু সন্তানকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত ডা. রাজু আহমেদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও স্থায়ীভাবে কর্মচ্যুত করার দাবি জানিয়ে আবারও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।

 

মানববন্ধনে ডা. রাজুর শাস্তির দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম বেধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নিলে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করার হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা। এসময় যৌন নিপীড়ন বিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকোর্ড হাতে আন্দোলনকারীরা ‘ডা. রাজুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ ‘এক দফা এক দাবি, ডা. রাজুর অব্যহতি’ বলে স্লোগান দেন।

 

 

মানববন্ধনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, আমাদের কাছে এখন সন্তানের যৌন নিপীড়নও একটা ঘটনা মাত্র। এখানে আমরা দশ থেকে পনেরো জন শিক্ষক মাত্র অবস্থান নিয়েছি। কেন এক হাজার শিক্ষক এখানে আসলো না? কারণ এখন তাদের একটাই চিন্তা কিভাবে একটি বড় পদে যাবে, কিভাবে প্রভোস্ট হবে, প্রক্টর হবে। আপনার আমার সন্তানের কি হবে এই নিয়ে কারো কোন দায়বোধ নেই। তারা মনে করে এরা অন্যের মেয়ে নিজের মেয়ে না। এ দেশ এখন একটি বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে আছে। আমরা শুক্রবার ও শনিবার এই দুই দিন প্রশাসনকে বিচারের জন্য সময় দিলাম যদি বিচার না পাই তাহলে আমরা আরো কঠোর আন্দোলনে যাবো।

 

 

মানববন্ধনে অভিযুক্ত ডাক্তার রাজুর শাস্তির দাবিতে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগীর শিশুর মা ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল সহযোগী অধ্যাপক সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ৭২ ঘন্টা পার হলেও এখনো প্রশাসন কোন ধরনের ব্যাবস্থা নেয়নি। পুলিশও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। কোন ক্ষমতা বলে তাকে এখনো গ্রেফতার করা হচ্ছে না? কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হলে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করার নিয়ম কিন্তু তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। উল্টো আমাদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মিমাংসার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমি কোন দুষ্কৃতকারীর সাথে সমঝোতা করবো না। আমি তার সুষ্ঠু বিচার চাই।

 

কর্মসূচিতে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অমিত কুমার বলেন, এই মানববন্ধন শুধু একজন মেয়ের জন্য না। ক্যাম্পাসের সব মেয়ের জন্য। এই ডাক্তারের কাছে আমাদের মেয়েরা নিরাপদ নয়। আমরা চাইনা আমাদের ক্যাম্পাসে এমন কোন হিংস্র পশু থাকুক, যে যেকোন সময় নারীর উপর হামলে পড়তে পারে। যারা এই অপরাধীর পক্ষ নিচ্ছে তারও সমান অপরাধী। কোন সমিতি যদি তাকে সাহায্য করে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন তাদের মেয়েরা কি তার কাছে নিরাপদ কি না? এই ঘটনাকে চাপানো মানে ১০ টা ঘটনার পথ তৈরী করা। আমরা চাই তাকে দ্রুত সাময়িক বহিষ্কার করা হোক এবং পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

 

 

মানববন্ধনে ফলিত রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দিলিপ কুমার সরাকারের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুলাহীল বাকীসহ বিভিন্ন বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক এবং শতাধিক শিক্ষার্থী।

 

 

উল্লেখ্য গত ৩০ অক্টোবর রাতে রাজশাহী নগরীর তালাইমারি এলাকার আমেনা ক্লিনিকে ডা. রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকার ১৩ বছরের শিশু সন্তানকে যৌন হয়রানির করার অভিযোগ উঠে। অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. রাজু আহমেদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। চাকরির পাশাপাশি বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসা দেন তিনি। এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা। এছাড়া এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় অভিযুক্ত ডা. রাজুর শাস্তির দাবিতে একই স্থানে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য গত ৩০ অক্টোবর রাতে রাজশাহী নগরীর তালাইমারি এলাকার আমেনা ক্লিনিকে ডা. রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকার ১৩ বছরের শিশু সন্তানকে যৌন হয়রানির করার অভিযোগ উঠে। অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. রাজু আহমেদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। চাকরির পাশাপাশি বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসা দেন তিনি। এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৩ | সময়: ৭:১১ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine