পুকুর জবরদখলের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার

রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার ৪নং দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টুর বিরুদ্ধে ৭৬ বিঘার একটি পুকুর জবর দখলের অভিযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৮ জুলাই) দেলুয়াবাড়ী ইউপির আংরার বিলে ওই পুকুরের পাড়ে এই মানববন্ধন করেন ভুক্তোভোগী পুকুর মালিকরা।

 

পুকুর লিজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও জোরপূর্বক দখল ও কৃষকের কাছ থেকে লিজ নেয়ার ডিড জালিয়াতি করে ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টু পুকুরটি জবর দখল করে নিয়েছেন বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়। একই অভিযোগে গত ১ আগস্ট ৪ নং দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টুর বিরুদ্ধে দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন পুকুর মালিকরা।

 

 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দূর্গাপুর উপজেলার ৪ নং দেলুয়াবাড়ী গ্রামের সাথে আংরার বিলে গ্রামের কৃষকদের ৭৬ বিঘার একটি পুকুর ১০ বছর আগে ৬০ জন কৃষকের কাছে থেকে ১০ বছরের জন্য দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টু লীজ নেয়। সেই সময় মাত্র ৯ হাজার টাকা বিঘা প্রতি বছর চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান রেন্টু কৌশলে লীজ নিয়েছিলেন। পুকুর লীজ নেয়া ১০ বছর পূর্তি হলেও তিনি ১৩ মাসে এক বছর মেয়াদে ডিড করে নেয়। কিš‘ু ডিডের কাগজ কোন কৃষককে দেখাননি তিনি। এমনকি ১৩ মাসে এক বছর হিসাবে পুকুর লীজ নেয়ার বিষয়টি সবার কাছে গোপন রাখেন তিনি। সেই পুকুরে উপজেলার নারায়নপুর জামে মসজিদেরও ২ বিঘা ৫ কাঠা জমি রয়েছে বলে মানববন্ধনে জানানো হয়।

 

গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় গ্রামের সালিসে চেয়ারম্যান রেন্টুকে নিয়ে পুকুরের জমির মালিকরা বৈঠকে বসলে তিনি জমির মালিকদের চাপের মুখে পড়ে পুকুরের দখল ছেড়ে দেয়ার কথা বলে চারদিন সময় নেন। কিন্তু সময় অনেক আগেই অতিবাহিত হলেও তিনি এখন পর্যন্ত পুকুর দখল করে রেখেছেন। একইসঙ্গে তিনি আরও ১০ মাস পুকুর দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

 

মোকাদ্দেস, আব্দুল হান্নান, আব্দুল মান্নান, কাউছার আলী, হোসেন আলীসহ একাধিক ভুক্তভোগী পুকুর মালিক মানববন্ধনে জানান, লীজের মেয়াদ শেষ হলেও চেয়ারম্যান রেন্টু জোর করে দখল করে রেখেছে আমাদের পুকুর। তাছাড়া বর্তমান বাজারে ৫০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি বছর হিসাবে চুক্তি হচ্ছে এমন একাধিক পুকুর এলাকায়। প্রায় ৬০ জন কৃষকের জমি চেয়ারম্যান রেন্টু জালিয়াতি ও জবর দখল করে তার ক্ষমতার বলে দখল করে রেখেছে। উল্টো হুমকির মুখে রেখেছেন পুকুর মালিক কৃষকদের। কৃষকদের জিম্মি করে রেখেছে রেন্টু।

 

চেয়ারম্যান রেন্টুর দখল থেকে মুক্ত ও গ্রামের ৬০ জন কৃষকের জমিতে পুকুর তার হাত থেকে উদ্ধার ও ন্যায্য পাওনার টাকা পুকুর মালিকদের বুঝিয়ে দিতে হবে বলে ৬০ জন পুকুরের জমির মালিক সাক্ষর দিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। ওই লিখিত অভিযোগের অনুলিপি রাজশাহী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, দূর্গাপুর সহকারী কমিশনার ভূমি ও দূর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে দেয়া হয়েছে।

 

এ বিষয় যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার ৪ নং দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টু বলেন, বৈধভাবেই পুকুর আমার দখলে আছে। ডিডেরও টাইম আছে। আমি সব সংস্থাকেই ডকুমেন্ট দিয়েছি। বরং যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে তাদের কাগজপত্র ভুয়া।

সানশাইন / শাহ্জাদা মিলন


প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২২ | সময়: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine