ইউএনও’র স্ত্রীর মর্যাদার দাবি নিয়ে সড়কে বসেছেন নারী

আক্কেলপুর প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলামের স্ত্রীর মর্যাদার দাবি তুলে নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে শহরের প্রধান সড়কে জিনাত আরা খাতুন কলি নামের এক নারী অনশন করেছে। ঘটনাটি বুধবার বিকালে ঘটেছে।
ওই নারীর দাবি, তিনি ইউএনও আরিফুল ইসলামের বিবাহিত স্ত্রী। তার একটি শিশু ছেলে সন্তান রয়েছে। তিনি দিনাজপুরের একটি স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক হিসাবে কর্মরত বলে জানিয়েছেন। এসময় প্রায় আধাঘণ্টা সড়কে যানচলাচল বিঘ্নিত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার বিকেলে ইউএনও অফিসের সামনে জিনাত আরা খাতুন কলি নামের এক নারী সদর রাস্তার সকল যানবাহন অবরোধ করে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে রাস্তার মাঝে বসে পড়েন।
তিনি জানান, বর্তমান ইউএনও আরিফুল ইসলাম দিনাজপুর সদরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে একটি জমি খারিজ করতে গিয়ে তার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে ২০২১ সালে রংপুরের একটি রেস্ট হাউসে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
জিনাত গর্ভবতী হলে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন তার স্বামী। পরবর্তীতে তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। বিবাহের বিষয়টি ইউএনও কৌশলে গোপন করেন। পরে জিনাত আরা খাতুনকে স্ত্রী হিসাবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় ইউএনও আরিফুল ইসলাম।
এই ঘটনার জের ধরে বুধবার স্ত্রীর মর্যাদা পেতে দুপুরে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলামের বাংলোতে এসে তার সাথে দেখা করার চেষ্টা করেন। এসময় তার নিরাপত্তা কর্মী আনসার সদস্য এবং ইউএনও তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তার সাথে আসা পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করে বাহিরে বের করে দেন। পরে বিকালে অফিসের সামনে প্রধান সড়কের যানবাহন আটকিয়ে স্ত্রীর মর্যাদার দাবি করেন। সুবিচার পাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন্দের উপস্থিতিতে স্থানীয়রা তাকে টেনে হিচড়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
জিনাত আরা বলেন, ‘এবিষয়ে কোন সমাধান না পেলে আমি আইনের দ্বারস্থ হবো’।
জিনাত আরা খাতুনের সহোদর মুক্তার হোসেন বলেন, ‘ইউএনও আরিফুল ইসলাম প্রথম স্ত্রী থাকা সত্বেও তিনি আমার বোনকে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। পরে তিনি বিষয়টি গোপন করে। তিনি তার শিশু সন্তান এবং স্ত্রীকে মর্যাদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। আমার বোনের স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে এখানে আসলে তিনি আমাদের হেনস্তা করেন’।
উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন্দ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে বসেছি। আইন মোতাবেক শান্তিপূর্ণ সমাধান করা হবে’।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এটি প্রথম আমি আপনার কাছে শুনলাম। আমাকে ব্ল্যাক মেইল করে ট্র্যাপে ফেলার একটি বিষয় ছিল। তাকে তালাক দেওয়া হয়েছে। আইনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে। এটি একটি পারিবারিক বিষয়’।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩ | সময়: ৭:১০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর