তানোরে শীতবস্ত্রের অভাবে কাঁপছে মানুষ

তানোর  প্রতিনিধিঃ

 

রাজশাহীর তানোরে গেলো মঙ্গলবার ও আজ বুধবার এই দু’দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। এরপরও ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া বইছে সব সময়। ফলে শীতের প্রকোপ ও তীব্রতা বেড়েছে দ্বিগুন। এতে খেটে খাওয়া মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। ফলে জনজীবনে দূর্ভোগ নেমে এসেছে। এতো শীতেও সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসেনি কেউ।

 

 

তবে, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এরির্পোট লেখা পর্যন্ত রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে রাজশাহী আবহাওয়া সূত্র জানিয়েছেন। উপজেলার কামারগাঁ ইউপির দূর্গাপুর এলাকার ভ্যানচালক রুবেল হোসেন বলেন, গেলো মঙ্গলবার সারাদিন ও  বুধবার দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা যায়নি। সমিতির কিস্তি ও দেড় কেজি চালের জন্য এতো শীতেও ভ্যান নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি। তাই মোড়ে ভ্যান নিয়ে অপেক্ষায় বসে আছি। এখন দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শুধু ১৫ টাকা ভাড়া হয়েছে। আজকে দিনটা অনেক কষ্টে যাবে বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
তানোর পৌর এলাকার এক বৃদ্ধ ভিক্ষুক বলেন, ঘরে কিছুই নেই। এজন্য বাইরে বের হয়েছি। খুব ঠান্ডা পড়েছে। ঘনকুয়াশায় কিছু দেখা যাচ্ছে না। ঘরে শুয়ে থাকার উপায় নেই। পেটের দায়ে রাস্তায় নেমেছি। কিন্তু কোন বাড়ির দরজা খোলা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এক মানুষের বাড়ির বারান্দায় বসে আছি।

 

 

তালন্দ বাজারের বিপ্লব হোসেন বলেন, সকাল থেকেই ঘনকুয়াশায় চারপাশ ঢাকা পড়েছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে বাচ্চারা। এতো শীতের মধ্যে স্কুলে যাচ্ছে তারা। এদিকে, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাঁচি ও কাশিসহ কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। অপরদিকে, শীতের কারণে সারাদিনই গরম পোশাক পরে বিভিন্ন পাড়া গাঁয়ের মানুষজনকে খড় জ্বালিয়ে আগুন পোয়াতে দেখা গেছে। গৃহকর্মী শেফালী জানান, গৃহপালিত গরু ও ছাগলের খাবার জোগাড়ে বাড়ির বাহির হলে তাদের বিভিন্ন রোগবালাই আসছে। প্রয়োজনের তাগিদে পানি ব্যবহার করছেন তারা। এতে হাঁচি ও কাশি হচ্ছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে ওষুধ নেয়ার ব্যাপারে বলা হলে চিকিৎসকরা শীতকালীন রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে গরম পানি পান করাসহ গরম কাপড় ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। এতো শীতেও সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে কোন শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি।

 

 

 

 

এবিষয়ে তানোর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৩৯৫ পিস কম্বল ইতোমধ্যে ৭টি ইউনিয়নে দেয়া হয়েছে। আরও কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। বরাদ্দ পেলে বিতরণ করা হবে। এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ফরিদ হোসেন বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীর চাপ থাকলেও হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

 

 

 

 

সানশাইন/টিএ

 


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩ | সময়: ৯:১২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর