আ’লীগের ত্যাগি নেতা নুরুর সংসার চলে হকারী করে

মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: নূর মোহাম্মাদ নুরু ভাই (৫৮)। বাগমারা উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি। বাগমারা ও আশেপাশের এলাকায় তিনি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ও আওয়ামী লীগের ত্যাগি নেতা হিসাবে পরিচিত। আশির দশক থেকে নব্বই পর্যন্ত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন। এর পর নব্বই থেকে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবিরের তাণ্ডব। সব কিছুতেই তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। থেকেছেন মিছিলের অগ্রভাগে অকুতোভয় এই বঙ্গবন্ধুর সৈনিক।
বাগমারাসহ সমগ্র জেলাতেই যখন আওয়ামী লীগের চরম দূর্দিন। বাগমারাতে ছিল না কোন দলীয় কার্যালয়। জামায়ত শিবিরী তাণ্ডবে আ’লীগের নাম নিতে ভয় পেত মানুষ। তখন সরদার আমজাদ হোসেন, বাবু শ্রী রাখাল চন্দ্র দাশ, নুরুল ইসলাম হেডমাষ্টার ও আলো খন্দকারের মত মুজিব প্রেমী সৈনিকদের সাথে বাগমারায় আ’লীগের প্রদীপ প্রজ্জলিত করে রেখেছেন নুর মোহাম্মাদ নুরু ভাই। আজ তিনি বয়সের ভারে নতজানু। তারপরও জীবিকার তাগিদে তাহেরপুর বাজারের ফুটপথে তাকে বসতে হয়। তার কোন জমিজমা নেই। রোদ ঝড় বৃষ্টির মাঝেও থেমে থাকে না তার জীবন সংগ্রাম।
স্থানীয়রা জানান, নুরু ভাই জন্মগতভাবেই মুজিব ভক্ত। আ’লীগের আন্দোলনে যখন যেখানে ডাক পড়ে তিনি ছুটে যান। অতীতে বাগমারা আ’লীগের ভগ্নদশায় নুরু হকারী পেশার টাকা দিয়ে দলতে চাঙ্গা করেছেন। আ’লীগ প্রেমিক সেই যুবক ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকা অবরোধ আন্দোলনে গ্রেপ্তার হয়ে চার মাস জেল খাটেন। পরে শেখ হাসিনার তদবিরে তার জামিন হয়। আ’লীগে করতে গিয়ে এমনি অনেক নির্যাতন ও মামলা হামলার কথা জানান নুরু ভাই। আ’লীগ করেও ভাগ্য পরিবর্তন না হলেও আক্ষেপ নেই তার।
নুরু জানান, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধ আমার বিশ্বাস আমার চেতনা। বাকি জীবন আ’লীগের একজন কর্মী হিসাবে থাকতে চাই।
তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন জানান, দলে নুরুর মত ত্যাগি নেতা খুব কমই চোখে পড়ে। এখনও মানুষের বিপদ আপদে নুরু সবার আগে ঝাপিয়ে পড়েন।
তাহেরপুর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ জানান, নুরু সারা জীবন আওয়ামী লীগকে শুধু দিয়েই গেছেন। তার নীতি আদর্শ আমাদের অনুসরণ করা উচিত ।


প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২২ | সময়: ৪:০৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ