জমজমাট নওগাঁর ঈদ বাজার দাম বেশি বলেছেন ক্রেতারা

রায়হান আলম, নওগাঁ: মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে কেন্দ্র করে জমজমাট এখন নওগাঁর ঈদ বাজার। পরিবার-পরিজনের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনতে ছোট-বড় মার্কেট, বিভিন্ন বিপনি বিতানগুলোতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। পিছিয়ে নেই ফুটপাতের বেচাকেনাও। ক্রমেই বাড়ছে ক্রেতা সমাগম।
ক্রেতারা বলছেন-অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর পোশাকের দাম অনেকটাই বেশি। তারপরও পরিবারের ঈদ আনন্দের কথা ভেবে কিনতেই হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে তাল মিলিয়ে পোশাক কিনতে হিমসিম অবস্থা অনেকেরই।
বিক্রেতারা বলছেন, ১০টা রোজার পর থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। বেচাকেনা ভালো হওযায় খুশি তারা। রোজার শেষ সময়ে ভিড় আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
শহরের ফুটপাত ও বিভিন্ন বিপনি বিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে- সব জায়গায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। বিপনী বিতানগুলোতে মিলছে দেশি-বিদেশি সব ধরনের পোশাক। বাহারি পোশাক থেকে সেরা পোশাক বাছাইয়ে তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে এক দোকান থেকে অন্য দোকেন ছুটে বেড়াচ্ছেন ক্রেতারা। ঈদে ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে বিক্রেতারাও আগেভাগেই পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন।
এবছর পুরুষের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্ট-প্যান্ট, টিশার্ট আর মেয়েদের ঈদ শপিংয়ে প্রাধান্য পেয়েছে আলিয়া কাট, নায়রাকাট, আফগান, আনারকলিসহ বিভিন্ন থ্রি-পিস। শিশু কিশোরদের পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা। মেয়েদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে আর ছেলেদের দেড় হাজার থেকে শুরু করে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে এবছর পোশাকের দাম বেশি।
তানভীর আহমেদ নামের এক ক্রেতা বলে- গত বছরের চেয়ে এবছর সব পোশাকের দাম অনেক বেশি। গতবার যেসব পোশাক ১ হাজর থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছি কিন্তু এই মুহূর্তে এই পোশাকগুলোই ১ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে যেভাবে জিনিসের দাম বেড়েছে মধ্যবিত্তদের কেনাকাটা করা সম্ভব নয়। তারপরও বাধ্য হয়ে ছেলে-মেয়ের কথা চিন্তা করে কিনতে হচ্ছে। এখানে কিছু করার নেই।
দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাফিসা আক্তার বলেন- মায়ের সাথে বাজার করতে এসেছি। ব্যাগ এবং ড্রেস কিনবো। তবে পছন্দের তালিকায় নায়রাকাট ড্রেস রয়েছে। খুঁজতেছি এখনো কেনা হয় নাই। দাম বেশি হওযায় প্রত্যেকটা দোকানে দেখতে হচ্ছে। আরো কয়েকটি দোকান দেখি তারপর কিনবো।
রোজিনা ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন- ছেলে, মেয়ে ও নাতিদের নিয়ে পোশাক কিনতে এসেছি। তাদের জন্য কিছু কিছু পোশাক কেনা হয়েছে আরো কিনতে হবে। সব জিনিসের দাম যখন বেড়েই চলেছে এখনে বলার কিছু নেই।
গীতাঞ্জলি মার্কেটের ব্যবসায়ী নিবেন চন্দ্র ঘোষ বলেন- ১০ রমজানের আগে তেমন কোনো বেচাকেনা ছিল না। ১০ রমজানের পর থেকে আমাদের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে এখনো পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হচ্ছে মেয়েদের পোশাক ও ছোট বাচ্চাদের। মেয়েদের আলিয়া কাট, নায়রাকাট, আফগান, আনারকলিসহ বিভিন্ন থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হচ্ছে। ছেলেদের পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, শার্ট-প্যান্ট ও টিশার্ট।
দাম বেশির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমদানি খরচ ও ডলারের মূল্যে বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়েছে দামে। একারনে এবছর পোশাকের দাম বেশি।
বিশাল ক্লোথ স্টোরের ব্যবসায়ী সানোয়ার হোসেন বলেন- গত বছরের তুলনায় এবছর বেচাকেনা অনেক ভালো। ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যে থেকেই পোশাক কিনছেন। এখনো ঈদের কয়েকদিন দেরি আছে আশা আরো ভালো বেচাকেনা হবে।


প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৪ | সময়: ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ