বাঘার গ্রামীণ জনপদ বদলে দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নুরুজ্জামান, বাঘা: রাজশাহীর বাঘায় বর্তমান আ’লীগ সরকারের একটানা ১৫ বছরে দু’টি পৌর সভার আদলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে যোগাযোগ খাতের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল একেবারে নাজুক। পিছিয়ে পড়েছিল বাঘা উপজেলা। এদিক থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় এবং বিদেশী দাতা সংস্থার মাধ্যমে এ উপজেলার দু’টি পৌর সভা আড়ানী-বাঘার মাধ্যমে প্রায় ৮শ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। ফলে বদলে গেছে গ্রামীণ জনপদ, বেড়েছে মানুষের জীবন যাত্রার মান ও কর্মসংস্থান।
স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, এ সকল উন্নয় সম্ভব হয়েছে স্থানীয় সংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের একান্ত প্রচেষ্টায়।
উপজেলা আড়ানী পৌরসভা কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে আড়ানী পৌর এলাকায় স্থানীয় সরকারের অধিন (এডিপি) খাতে ১৫০ কোটি টাকা, এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট (আইইউআইডিপি) খাতে ৮০ কোটি, শহর অবকাঠামো (ইউটিআইডিপি) খাতে ৯০ কোটি , রাজস্ব খাতে ১১০ শ কোটি, বিদেশী দাতা সংস্থা (কুয়েত) পৌর সভা অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ১০০ কোটি এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অধিন (আইইউআইডিপি) ফেস-টু এর আওতায় আরো ৪০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরো কিছু বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পৌর সভার প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও চারঘাট-বাঘার সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের একান্ত প্রচেষ্টা না থাকলে এখানে এতো কিছু উন্নয়ন করা সম্ভব হতো না।
তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং বর্তমান মেয়র মুক্তার হোসেনের কারণে এ সকল বরাদ্দ পাওয়া থেকে শুরু করে নানা মুখি উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়েছে। এই উন্নয়নের কারণে বদলে গেছে পৌর এলাকার দৃশ্যপট। এখন মানুষকে কাদা-পানি পাড়ি দিয়ে আর বাজারে আসতে হয়না। বাড়ি থেকে বের হলেই তারা পাকা রাস্তা দিয়ে অনায়াশে চলা-ফেরা করতে পারে। এজন্য পৌর এলাকার মানুষ বেজায় খুশি এবং তারা এ সকল উন্নয়নের জন্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ও মেয়র মহাদ্বয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, এ সমস্ত উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে প্রধান-প্রধান রাস্তা সহ পাড়া-মহল্লায় অসংখ পাকা রাস্তা নির্মাণ, কালভাট-ব্রিজ স্থাপন, সেনিটেশান ও টিউবয়েল স্থাপন, হাট-বাজার উন্নয়ন, ক্লাবঘর ও যাত্রী ছওনী নির্মাণ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহায়তা ও নির্মাণ এবং পৌর এলাকায় ল্যাম্পপোস্টের মাধ্যমে আলোকবাতি প্রজ্জলন সহ সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা।
আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি বর্তমান সরকারের সুযোগ্য নেতা শাহরিয়ার আলমের প্রতি। কারণ তিনি পাশে ছিলেন বলে আমরা পৌর বাসিরা আজ এতটা উপকৃত। তিনি বলেন, পৌর এলাকায় নানা উন্ননের কারণে আমার বিশ্বাস এ অঞ্চলের মানুষ আবারও বর্তমান সরকারের প্রতিনিধি শাহরিয়ার আলমকেই মুল্যায়ন করবেন।
অপরদিকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়ায় গত ১৫ বছরে বাঘা পৌর সভায় স্থানীয় সরকারের অধিন (এডিপি) খাতে ১৮০ কোটি টাকা এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট (আইইউআইডিপি) খাতে ৯৫ কোটি, শহর অবকাঠামো (ইউটিআইডিপি) খাতে ১০০ কোটি, রাজস্ব খাতে ৩ কোটি, বিদেশী দাতা সংস্থা (কুয়েত) পৌর সভা অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ২০০ কোটি এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অধিন (আইইউআইডিপি) ফেস-টু এর আওতায় আরো ১১০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরো কিছু বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাঘা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল নাসির উদ্দিন জানান, বাঘা পৌর সভাটি প্রথম শ্রেণির পৌর সভা হওয়ায় গত অর্থ বছরে বাংলাদেশে ৩০টি পৌর সভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে রয়েছে রাজশাহীর বাঘা পৌরসভা। এজন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২২ কোটি ১১ লাখ টাকা। এরমধ্যে বাঘা পৌর সভার কাজটি অনুমোদন পাইয়ে দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
এই পৌর সভার প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, এসব বরাদ্দ দিয়ে পৌর এলাকায় প্রায় ৬০ কিলো মিটার পাকা রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ, কালভাট, সেনিটেশন, রাস্তার পাশ দিয়ে লাইট স্থাপন এবং দুইটি বাজারে মার্কেট নির্মাণ সহ এলাকায় নানা উন্নয়ন মুলক কাজ করা হয়েছে। এ জন্য বাঘা পৌর এলাকার সাধারণ জনগনের মধ্যে নানা কতুহল রয়েছে।
তারা বলেন, বিগত সময়ে পৌর এলাকায় কখনো এতো উন্নয়ন হয়নি। তাদের বিশ্বাস স্থানীয় সংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কারনে মুলত এতো উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, এ সব বরাদ্দের বাইরে বর্তমানে পৌর এলাকায় উন্নয়নের জন্য আরো প্রায় ৬০ কোটি টাকার একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। যার কাজ খুব শির্ঘই শুরু হবে।
বাঘা পৌর এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মুন্ট এবং আ’লীগের সিনিয়র সদস্য মাসুদ রানা তিলু সহ অনেকেই বলেন, বাঘা পৌর সভায় বর্তমান সরকারের এক টানা ১৫ বছরে অনেক উন্নয় হয়েছে। এখন পাড়া-মহল্লা সর্বত্র পাকা রাস্তা, সেই সাথে রয়েছে আলোক সজ্জা। তবে কিছু কাজে আংশিক অনিয়ম এবং বেশ কিছু এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা লক্ষ্যণীয়। তাঁরা খুব শির্ঘই এসব জলাবদ্ধা নিরসনের দাবি জানান।
এদিকে এসব উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলম বলেন, বাঘা-চারঘাট এর তৃণমূল লোকজনের চাহিদা বিবেচনা করে এলাকায় উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে চারঘাট-বাঘা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় রয়েছে। আমার জানা মতে, এই দুই উপজেলার কোন গ্রামে কাঁচা রাস্তা পাওয়া যাবেনা। আমি দুই পৌর সভা এবং ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে অনেক কাজ (প্রকল্প) এনে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
মন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক সহযোগীতায় শুধু বাঘা-চারঘাট নয়, বৃহত্তর রাজশাহীতেও ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে যদি আমরা সরকার গঠন করতে পারি তবে এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৩ | সময়: ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ