রাজশাহীতে ভারী বর্ষণ, জলমগ্ন সড়ক

স্টাফ রিপোটার: সকালে সূর্যের হাসি দিয়ে দিন শুরু হয়েছিল। দুপুরে মেঘলা আকাশ সঙ্গে ভেপসা গরম। এমন গরম বৃষ্টির আভাস দেয়। দুপুর গড়াতেই ধিরে ধিরে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যেতে থাকে। বিকেল ৪টার দিক থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। রাজশাহী মহানগরজুড়ে ঝুম বৃষ্টি। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এমন বৃষ্টিতে নগরজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। চরম বিপাকে পড়েন নগরবাসী।
রবিবার সকালে রাজশাহীতে রোদের দেখা মিললেও দুপুরের পর থেকে জমতে থাকে মেঘ। বিকেলে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। মুশলধারে এই বৃষ্টিতে রাজশাহীর উপশহর, সাহেব বাজার, নিউমার্কেট, কোর্ট বাজার, হড়গ্রাম, তালাইমারী, ভদ্রা, সপুরা, শিরোইল, রানী বাজার, হেতেম খা, তেরখাদিয়াসহ অনেক এলাকায় দেখা দেয় জলবদ্ধতা। এ ছাড়াও হাটু পানি ডুবে যায় মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক। ঝুম বৃষ্টিতেই এ জলবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার মানুষ। নগরীর কোন কোন এলাকায় বাড়িতে ঢুকে পড়ে বৃষ্টির পানি।
বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত বজ্রপাতের কারণে কোথাও কোন হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।
ভারি বৃষ্টিতে বিশেষ করে অফিস ফেরা মানুষদের পোহাতে হয়েছে চরম ভোগান্তি। কোথাও যানবাহন নেই। পায়ে হেঁটে হাঁটু পানি ভেঙে কাক ভেঁজা হয়ে ফিরতে হয়েছে বাড়ি।
নগরীর কয়েরদাঁড়া এলাকার রেদওয়ানুল হক। অফিসের কাজে গিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। সেখান থেকে ফেরার পথে বৃষ্টির মাঝে পড়েন তিনি। দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পরে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন তিনি। তিনি বলেন, সারা রাস্তা হাঁটু পানিতে ডুবে আছে। মোটরসাইকেল নিয়ে বেশ বিপাকে পড়তে হয়েছে তাকে।
পবার মধুসূদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলাবা খাতুন। অফিস শেষ হয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিতেই শুরু হয় বৃষ্টি। ভারি বৃষ্টি ও ঘণঘণ বজ্রপাতের মধ্যেই ভিজে তাকে বাড়ি ফিরতে হয়।
দিলারা বেগম জানান, বাড়ি ফিরতে বেশ বিপাকে পড়তে হয়েছিল তাকে। সঙ্গে বজ্রপাত। বেশ আতঙ্ক নিয়েই বাড়ি ফিরেছেন তিনি।
নগরীর ভদ্রা এলাকার গৃহবধূ শিল্পী জানান, ঝুম বৃষ্টিতে তার বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। অনেক জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। ঘরের খাট পর্যন্ত ডুবে গেছে পানিতে।
এমন পরিস্থিতি নগরীর অনেক জায়গায়। বৃষ্টির পানি বাড়িতে প্রবেশ করেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকেই।
এরআগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে ঝাড়খন্ড এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু উত্তরাংশে সক্রিয় এবং বাংলাদেশের অন্যত্র মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে।
এছাড়াও আগামী ২৪ ঘন্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩ | সময়: ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ