ওয়ানডে সুপার লিগ, শেষটায়ও ভালোর অপেক্ষায় বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে ও সবগুলো দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আইসিসি চালু করে ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগ। ভারতে হতে যাওয়া ২০২৩ বিশ্বকাপে ১০ দল অংশ নেবে।
আয়োজক দেশ হিসেবে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলবে ভারত। সাত দল বেছে নেওয়া হবে সুপার লিগ থেকে। সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের প্রথম সাত দল সরাসরি বিশ্বকাপের ছাড়পত্র পাবে। সেই সাত দলের মধ্যে ভারত থাকলে আট নম্বর দল বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। বাকি দুই জায়গার জন্য সুপার লিগের শেষে থাকা দলগুলো কোয়ালিফায়ার টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হবে সহযোগী দেশগুলোর।
১৩০ পয়েন্ট নিয়ে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে তালিকার চতুর্থ স্থানে আছে বাংলাদেশ। ২১ ম্যাচে ১৩ জয়ে বাংলাদেশ সুপার লিগে শুধু ভালো অবস্থানেই নেই, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে ফেলেছে। লম্বা এ পথ চলায় নিজের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা দেখিয়ে বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে বিশ্বকাপের টিকিট।
হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে বাংলাদেশ সুপার লিগে খেলবে মোট আটটি সিরিজ। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সাতটি সিরিজ খেলেছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ আইসিসি সুপার লিগের অন্তর্ভূক্ত। জয়ে শেষটাও রাঙানোর প্রত্যাশায় বাংলাদেশ।
ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০, শ্রীলঙ্কাকে ২-১, আফগানিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কেবল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হেরেছে। সেটাও ২-১ ব্যবধানে। দেশের বাইরে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় পেয়েছে ২-১ ব্যবধানে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে ৩-০ ব্যবধানে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিততে পারলে শেষটা মধুর হবে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের জন্য এই সিরিজটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও আয়ারল্যান্ডের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই। বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে হারাতে পারলে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপে চলে যাবে আইরিশরা। আর ৩-০ ব্যবধানে জিততে না পারলে জুনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে।
আয়ারল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে ৩০ পয়েন্ট পেলে সুপার লিগ দুইয়ে থেকে শেষ করার সুযোগ আছে বাংলাদেশের সামনে। তামিম অ্যান্ড কোং নিশ্চিতভাবে সেই লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে। এই দলের লক্ষ্য যে শুধু বিশ্বকাপ অংশগ্রহণ নয় তা তামিম আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ সেরা চারে থেকে শেষ করবে। আপনি যদি ৭ বা ৮ নম্বর হয়ে বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই করেন তাহলে সেটা কোনো পার্থক্য তৈরি করে না। যদি আমরা সেরা চারে থেকে যেতে পারি সেটাই একটা ব্যাপার হবে। অধিনায়ক হিসেবে চারে থেকে শেষ করাই আমার লক্ষ্য। কয় ম্যাচ জিততে পারি, কত পয়েন্ট এসব আমার কাছে বিষয় না, আমার কথা হলো শীর্ষ চারে থাকা।’
হাথুরুসিংহেরও লক্ষ্য সবধরনের কন্ডিশনে জয়। দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশের কোচ বলেছিলেন, ‘ব্যাপারটি শুধু ইংল্যান্ডের কন্ডিশনের নয়, আমাদের সার্বিক উন্নতির জন্যও প্রয়োজন এটা। প্রতিপক্ষ নিয়ে ও ফলাফল নিয়ে দুর্ভাবনার ব্যাপারও এখানে নেই। আমরা উন্নতি করতে চাই। ভবিষ্যতে যেখানেই আমরা খেলি না কেন, উন্নতি করতে চাই। সামনে আমাদের অনেক খেলা আছে, বিশেষ করে দেশের বাইরে টেস্ট আছে কিছু।’
পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে ধারাবাহিক সাফল্যে বাংলাদেশ অন্যতম পরাশক্তি হয়ে উঠেছে। ২০২৩ বিশ্বকাপ হতে পারে নিজেদের মেলে ধরার সেরা মঞ্চ। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা ওয়ানডে সুপার লিগে অপ্রতিরোধ্য, নির্ভীক। কাট আউট টাইমের পর বাংলাদেশ নিজেদের চ্যালেঞ্জে জিততে পারলে মানসিকভাবে বিশ্বকাপে আরও চাঙ্গা থাকতে পারবে।


প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৩ | সময়: ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ