নওগাঁয় ধর্ষণ মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় আলাদা দুই ধর্ষণ মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার বেলা ১১টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এই রায় প্রদান করেন। একই রায়ে দুই আসামিকে ১ লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজল মালি এবং পোরশা উপজেলার গোবরাকুড়ি গ্রামের ওসমানের ছেলে হ্যাপি। রায়ের সময় কাজল মালি উপস্থিত থাকলেও হ্যাপি উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ারা জারি করা হয়।
দুই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মকবুল হোসেন। তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সুত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি পোরশা উপজেলার ইলাম গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এক মাদ্রাসা ছাত্রী তার নানির বাড়ি যাওয়ার পথে আম বাগানে নিয়ে অজ্ঞাতনামা একব্যক্তি জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ওই ছাত্রীর নানাকে খবর দিলে তিনি এসে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করান।
পরবর্তীতে ছাত্রীর নানা পোরশা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে পোরশা থানার গোবরাকুড়ি এলাকার ওসমানের ছেলে হ্যাপির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর আদালতে চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে গতকাল সোমবার তার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন আদালত। তবে রায় ঘোষণার সময় আদালতে তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
অন্যদিকে ২০২০ সালের ২৭ মার্চ পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে এক প্রতিবন্ধী নারী বেলা আড়াইটার সময় বাড়ির পিছনে শুকনো পাতা ঝাড়ু দিতে গেলে একই গ্রামের কাজল মালি পিছন থেকে জাপটে ধরে মুখে গামছা ভরে তার শয়ন কক্ষে নিয়ে গিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ১ এপ্রিল প্রতিবন্ধী ওই নারীর স্বামী পত্নীতলা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
স্বাক্ষ্যগ্রহন শেষে বিচারক যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। এসময় আসামী আদালতে উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ারা জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মকবুল হোসেন বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। বিশ্বাস করি দেশে এখনো ন্যায়বিচার আছে। এ রায়ের মধ্যে দিয়ে আগামীতে এই ধরণের ঘটনা ঘটাতে কেউ সাহস পাবে না।