কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক

 

পবা প্রতিনিধিঃ

কোভিড পরিস্থিতির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সার এবং কীটনাশকের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ গুণ। সেই সঙ্গে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় জাহাজ ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সারের আমদানি ব্যয় প্রায় ৪ গুণ বাড়িয়েছে সরকার ।

দেশে এখন আমন ধান চাষাবাদের উপযুক্ত সময় চলছে। কিন্তু কীটনাশক এবং সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের মাথায় দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে।

 

গতকাল সরজমিনে পবা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ঘুরে দেখা যায় বিলে আবাদি জমিতে আমন ধানের চারা লাগানো হয়েছে আর কিছু কিছু জমিতে চারা লাগানোর প্রস্তুতি চলছে।

এসময় বড়গাছি এলাকার শাহজাহান নামের একজন কৃষকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, “সরকার যে করি সারের দাম বাড়ি দিলো হামরা জমি চাষ করি ধান লাগামু ক্যামনে। ১ বিঘি জমি লাগাতে হামাদের খরচ পরে ৫-৬ হাজার ট্যাকা। এখনতো আবার বৃষ্টিও নাই ডিপ থেকে পানি সেচ দিতে হামারে বাড়তি খরচ হচ্ছে। তারউপরি আবার সারের দাম ব্যাড়াই দিছে এখন হামরা ধান লাগামু ক্যামনে”।

 

পবা উপজেলায় অবস্থিত কয়েকটি ইউনিয়নের সার কীটনাশকের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সার কেজি প্রতি ৪-৮ টাকা পর্যন্ত বাড়তি যা কৃষকে জন্য বাড়তি বোঝা। যেখানে আগে ইউরিয়া সার কেজি প্রতি ছিলো ১৮ টাকা এখন তা প্রতি কেজি বেড়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৪ টাকায়। ডিএপি আগে ছিলো ১৭ টাকা তা এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেক ২২ টাকায়, পটাশ ছিলো ১৯ টাকা তা এখন বেড়ে ২৩ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

আমন ধান লাগানোর জন্য কীটনাশকেরও দাম অধিকহারে বেড়ে গেছে। কেজি প্রতি প্রতিটি কীটনাশকের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
ভিরতোকা নামের কীটনাশক এক কেজির দাম ছিলো আগে ১৩০ টাকা তা এখন বেড়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়, কাটকাপ নামের এক কেজি কীটনাশক আগে বিক্রি হতো ১২০ টাকায় তা এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়।

এমতাবস্থায় কৃষকের মাথায় বাড়তি দুশ্চিন্তা কাজ করছে। এত দামে কীটনাশক সার কিনে ফসল লাগানোয় বাড়তি ব্যায়। আবার বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির অভাবে খালে বিলে নেই পর্যাপ্ত পানি। একেতো সারের দাম বেশি আবার পানি কিনে ফসল চাষ করা এক প্রকার মরার উপরে খাড়ারঁ ঘাঁ বলে মনে করছেন কৃষকেরা।

 

এদিকে পবা উপজেলা কৃষি কর্মকতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ” সরকার নির্ধারিত দামে যাতে সবজায়গায় সার বিক্রি হয় সেদিকে আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারকী করা হচ্ছে। কোথাও কেউ যদি সরকার নির্ধারীত দামের চেয়ে বেশি দাম নেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইননুসারে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকেরা যাতে ভালোভাবে ফসল উৎপাদিত করতে পারে সেজন্য আমরা সবসময় কৃষকের পাশে আছি”।

 

সানশাইন/তৈয়ব


প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২২ | সময়: ৮:০৭ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine