বাগমারায় পেট্রোল ও গ্যাস সিলিন্ডারের গুদামে আগুন

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারায় তেল ও গ্যাসের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এসময় দুইজন দগ্ধ হয়েছেন। রবিবার বিকেলে উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার পাহাড়পুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করছে। ওই গুদামের মালিক পাহাড়পুর গ্রামের ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান।
আবদুল হান্নান পেট্রল, তেল ও যমুনা গ্যাসের স্থানীয় পরিবেশক। তিনি পাহাড়পুর এলাকায় গুদামে রেখে এলাকায় সরবরাহ ও বিক্রি করে থাকেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, অজ্ঞতাবসত আগুনের ঘটনা ঘটেছে। লরি থামানোর কমপক্ষে একঘণ্টা সময় অপেক্ষা করতে হয়। তবে এখানে লরি থামানের সঙ্গে সঙ্গেই পেট্রল পাইপের মাধ্যমে নামানোর কারণে আগুন ধরেছে। তার মতে গুদামটিতে অগ্নিনির্বাপনের নূন্যতম কোন ব্যবস্থা না থাকায় মুহূর্তের মধ্যে আগুন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেল চারটার দিকে পেট্রল ভর্তি একটি লরি তার গুদামে আসে। সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে পেট্রল টিনের ড্রামে ভরছিলেন। এসময় সেখানে আগুন ধরে যায়। তবে কীভাবে আগুন ধরেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে আগুন গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। গুদামে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার ও ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের ড্রামে আগুন ধরে যায়। মুহুর্তে তা গুদামে ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় গুদামে থাকা অন্যান্য মালামালেও আগুন ধরে যায়। খবর পেয় স্থানীয় ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় নিকটবর্তী আত্রাই ও মোহনপুর উপজেলা থেকে আরও দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
বাগমারা থানা পুলিশের একটি দলও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে। তবে ভেতরে গ্যাস ও জ্বালানি তেল থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পোহাতে হয়। বিকেল পাঁচটায় নিয়ন্ত্রণে আসলেও সবকিছু পুড়ে ভস্মিভূত হয়।
এদিকে আগুন দেখে সেখানে ছুটে যান মালিক আবদুল হান্নানের ছেলে সাকিব হোসেন (৩৫)। তিনি গুদামের ভেতরে থাকা তার ব্যক্তিগত গাড়ি বের করে আনতে গিয়ে তিনি দগ্ধ হন। সেই সঙ্গে গাড়িও পুড়ে যায়। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও পেট্রলভর্তি লরিও পুড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গুদামের ভেতরে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। সিলিন্ডার কয়েক গজ দূরে এসে পড়ার কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য স্থানীয়রা আগুন নেভাতে ভয় পাচ্ছিলেন। দমকল বাহিনীর কর্মীরাও সর্তকতা অবলম্বন করে কাজ করেন আগুন নেভানোর।
বাগমারা ফায়ার স্টেশনের লিডার ইব্রাহিম হোসেন বলেন, বিকেল পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বাগমারার দুইটিসহ মোট চারটি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণ করা যায়নি। তবে মালিক আবদুল হান্নান বলেন, প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।


প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৪ | সময়: ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ