লাইটিং ফাঁদে গ্রাহক, দোকান থেকে বেরুলেই বদলে যাচ্ছে পোশাকের রং

মেহেদী হাসান, পুঠিয়া: বানেশ্বর, পুঠিয়াসহ রাজশাহীর সকল দোকানে আলোকসজ্জায় রাঙ্গানো হয় দোকান ও মার্কেট। আর এসব মার্কেটের বেশকিছু পোশাকের দোকান লাল-নীল বাল্ব দিয়ে লাইটিং করা হয়ে থাকে। চোখ ধাঁধালো এই রঙ্গিন লাইটের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে প্রতারণার ফাঁদ। এই রঙ্গিন আলোর ফলে বুঝা যায়না পোশাকের আসল রং এবং কোয়ালিটি। নিম্নমানের পোশাকও উন্নতমানের পোশাকের মত চকচকে-উজ্জ্বল দেখায়। এতে প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতা। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহী শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় আলোকসজ্জার মধ্য দিয়ে সাজানো হয় সকল মার্কেট ও দোকান। বিশেষ করে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে এসব লাইটিং বেশি চোখে পড়ে।
এসব মার্কেটে থাকা বেশকিছু বিপনী বিতানে সাদা লাইটের পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে লাল এবং নীল লাইট। মার্কেটের বড় দোকানগুলোতে রঙ্গিন লাইটের ব্যবহার কম দেখা গেলেও ছোট দোকান গুলোতে অহরহ। এছাড়া এসব লাইটের বেশি ব্যবহার দেখা যায় শিশু, থ্রীপিস ও জেন্টস আইটেমের দোকানে। জানা যায়, চোখ ধাঁধালো এসব রঙ্গিন লাইটের উজ্জল আলোতে পোশাকের আসল রং বুঝা যায়না।এতে ধূসর রঙ্গের কাপড়ও চকচকে উজ্জ্বল দেখায়। মূলত নিম্ন মানের কাপড় উন্নত মানের দেখাতে এই ফাঁদ পাতা হয় বলে জানান ক্রেতারা। আব্দুল মমিন নামের একজন জানান, এই প্রতারণার শিকার একবার আমার সাথে হয়েছিল। দোকান থেকে কিনেছিল নেভি ব্লু রঙ্গের শার্ট। কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখি ফুল নেভি ব্লু রঙ্গের না লাইটিং এর কালারের জন্য উজ্জল নেভি ব্লু মনে হচ্ছে এবং খুব সুন্দর লাগছিলো।
মাহমুদা নামে এক মেয়ে জানান, এই ফাঁদে পড়ে থ্রি পিস কিনে ঠকেছি। উজ্জ্বল আর চাকচক্যের কারণে নিম্ন মানের কমদামি পোশাক কিনেছি বেশি দাম দিয়ে। সেই থেকে এই ধরনের লাইটিং দোকান এড়িয়ে চলি। বিক্রেতাদের অনেকে দোকানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই ধরণের লাইটিং করা হয়েছে বললেও কয়েকজন বিক্রেতা স্বীকার করেছেন।
পুঠিয়া উপজেলাসহ বানেশ্বরের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, ক্রেতাদের এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা না। কালার লাইটিং করার ফলে তারাতারি পছন্দ করে তাই পোশাকের রঙ্গ ও মান লুকাতে সবাই রঙ্গিন লাইট ব্যবহার করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক পোষাক বিক্রেতা জানান, এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে ভাল ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্থ। সবাই যখন করেছে তাই আমিও লাইটিং করেছি। তা না হলে আমার দোকানে ক্রেতা কম আসছে। তারা মূলত নিম্ন মানের কমদামী কাপড় ভাল মানের বলে বেশি দামে বিক্রির জন্য এই কাজ করে।
এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসেনর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে বানেশ্বর গার্মেন্টস দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আবু শাহিনের কাছে কাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৪ | সময়: ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ