‘একটা হুইলচেয়ার হইলে আমার কষ্টটা যাইতো বাবা ’

স্টাফ রিপোর্টার : 

 

“বাবা হাটাহাটিঁ তো দূরের কথা! বাড়িতে আমার যেগলান কাজ আছে সেগলাই আমি করতে পারিনা। এই একটা ক্রাচে করি একটু সামান্য লড়াচড়া করতে পারি তাও দুই-তিনবার পড়ে গেছিুনু। একটা হুইলচেয়ার হইলে আমি তাও কষ্ট করে এখান-ওখানে যাইতে পারতাম। একটা হুইলচেয়ার হইলে আমার কষ্ট টা যাইতো বাবা”।

 

কথা গুলো বলছিলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার ৮নং বড়গাছি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বড় আমগাছি গ্রামের মোসাঃ মিনুয়ারা বেগম। অনেক আফসোস আর হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, ” আমরা গরিব মানুষ সরকারের কাছে চাইতেও পারি না, আর সরকারও আমাদের দু:খের কথা শুনতেও পায় না। কতজন তো কত্তকিছু পায় কিন্তু আমার অভাবের সংসারে হামরা কিছু পায় না। কাউর কাছে যে চাইবো তা আমি কার কাছে চাইবো? কে দিবে বাবা? আমাদের লোক নাই। লোক থাকলে ঠিকই পাইতাম। এইযে আমি প্রায় পাঁচ ছয় বছর থেকে বিছানায় অসহায়ের মত পড়েছিলাম কেউও তো দেখতে আসেনি একটাবার। আমার একটা হুইলচেয়ার হইলে আমি একটু একটু করে চলাফেরা করতে পারতাম কিন্তু আমাকে তো পাঁচ বছর হচ্ছে কেউ একটা হুইলচেয়ার দেয়নি। একটা হুইলচেয়ার পাইলে আমার কত্ত ভালো হতো”।

 

মোসাঃ মিনুয়ারা বেগম প্রায় ৫ বছর থেকে প্যারালাইসিস জনিত রোগের কারণে বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। তিনি ভালোভাবে চলাফেরা ও হাঁটাহাটি করতে পারেন না। এক স্বামী ও দুইটি সন্তানের সংসার হলেও স্বামী মোজাম আলী শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। স্বামী রাতের বেলায় অন্যের পুকুরে পাহারাদার হিসেবে কাজ করে মাস শেষে যা পায় তা দিয়ে বর্তমান বাজারে সংসার চালানোই অনেক কষ্টের হয়ে উঠে। এমতাবস্থায় অসহায় মোসাঃ মিনুয়ারা বেগম সাংসারিক কাজ করতে এবং চলাফেরা করতে সমাজের উচ্চবিত্ত এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে একটি হুইলচেয়ারের দাবি জানান।

সামাজিক সংগঠন ‘সৎ ইচ্ছায় রক্তদানের’ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘অসহায় এই মিনুয়ারা বেগমের কথা শুনতে পাই এবং আমরা আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে সমাজের উচ্চবিত্ত লোকেদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করি। এখন পর্যন্ত কেউ তাকে একটি হুইলচেয়ার দিতে সম্মতি হয়নি। আমরা আশা করছি অসহায় মিনুয়ারা বেগম কে সমাজের কোন একজন দয়ালু মানুষ একটি হুইলচেয়ার প্রদান করে তাকে চলাফেরা করতে সাহায্য করবে”।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪ | সময়: ৭:৫২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর