খরায় পুড়ছে ফসলের মাঠ

টিপু সুলতান, তানোর: বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও বরেন্দ্র অঞ্চল তথা তানোর উপজেলা খরার কবলে পড়েছে। তানোরসহ বরেন্দ্র অঞ্চচলে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ফসলের মাঠ পুড়ছে। চলতি মৌসুমে বোরো চাষের বিপর্যায়ের আশংকা রয়েছে। তানোরসহ গোটা বরেন্দ্র অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমান বৃষ্টির দেখা নেয়। আকাশের বৃষ্টির জন্য জুম্মার মসজিদে মসজিদে চলছে বিষেয় মোনাজাত। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় লোড শেডিংয়ের মাত্রা তানোরবাসির উপর থেকে সহসাই নামছে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তানোর বিদ্যুৎ অফিস। আর একই কারণে পল্ল্ী বিদ্যুৎ সমিতি ও নেসকো লিমিটেড কৃষি এলাকায় চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছেনা। চলমান তাপ প্রবাহে ও বিদ্যুতের ভয়াবহ লোড শেডিংয়ের কবলে পরে বিস্তীর্ণ বোরো ক্ষেত ইতিমধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, এবছর তানোরে বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে, ১২ হাজার ২শ ৬০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়ার প্রতিকুলতার ও বিদ্যুতের সমস্যার কারণে এবার হয়ত বোরো ধানের লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত না হবার আশংকা রয়েছে। আর প্রচন্ড খরতাপের কারণে জমিতে পানি দিয়ে থাকছেনা। আকাশের বৃষ্টি ও জমিতে সেচ দিতে পারলে লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হবে।
এদিকে, বৃষ্টির অভাবে প্রচন্ড তাপদাহে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার টিউবওয়েল গুলোতে পানি উঠছেনা, নষ্ট হয়ে গেছে বেশীর ভাগ টিউবওয়েল, শুকিয়ে গেছে নদ-নদী, খাল-বিল পুকুর।
তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কোন কোন এলাকায় কৃষকরা গভীর নলকুপ থেকে জমিতে পানি নিতে লম্বা সিরিয়াল দিয়ে জমিতে সেচ দিচ্ছে। এব্যাপারে তানোর পৌর এলাকার জিওল গ্রামের মহাসিন রেজা, আনছার আলী, ইমরান, আমশো গ্রামের দিপু, এনতাজ আলী, মামুন, উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের কৃষক রাজু, জানান, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় ঘনঘন লোড-শেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে গেছে। সময় মত জমিতে সেচ দিতে না পারলে বোরো ধানের ফলন ভালো হবে না। সেচের অভাবে জমি ফেটে গেছে।
লালপুর গ্রামের জিল্ল্ুর রহমান নান্নু, পাঁচন্দর এলাকার মিঠু, পাঠাকাটা গ্রামের আলমগীর জানান, প্রচন্ড খরতাপের কারনে গাছের লতা-পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দিয়ে এক দিন পর জমির পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, নদ-নদী, খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় কারণে উপজেলার মৎস্য চাষিরা পড়েছে মহাবিপাকে। তাদের জীবিকা নির্বাহ করা অতি কষ্ট কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তানোর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রচন্ড তাপদাহের কারণে খেটে খাওয়া মানুষগুলো পড়েছে চরম বিপাকে। বৃষ্টির দেখা নেয়। উপজেলার প্রতিটি মসজিদের ইমামদের বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে বলা হয়েছে।


প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৪ | সময়: ৪:২৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ