সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা :
পৌষের শেষ দিকে জেঁকে বসেছে শীত। কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ কষ্টে দিন পার করছেন। কুয়াশায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা। হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুর্যের দেখা মেলেনি। সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় বাঘায় অতিকষ্টে জীবন যাপন করছে অসহায় গরিবদুখী মানুষ।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, দেশের উত্তরের জনপদ গুলির মধ্যে রাজশাহীর সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘা অনতম। গত কয়েকদিন যাবত পৌষের মাঝামাঝি ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে নাকাল অবস্থা জনজীবন। সব থেকে বিপদে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর-সহ নিম্ন আয়ের মানুষ। এখানে প্রচন্ড শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলা ও আলু-সহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদি শীতের পাশা-পাশি কুয়াশা না কমে, তাহলে বিভিন্ন ফসলের ব্যপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে আতঙ্কে কৃষক। এ অঞ্চলে শীতজনিত কারণে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। গত এক সপ্তাহে অর্ধশতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এসব আক্রান্তের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, শীতজনিত কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক মানুষ। এখানে যারা ভর্তি রয়েছে তার মধ্যে সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলের রুগীর সংখ্যা বেশি।
বাঘার বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন,গত দুদিন থেকে মৃদু শৈত্য প্রবাহে অনেকটাই বিপর্যস্ত এখানকার জনজীবন। সূর্যের লুকোচুরিতে শীত নিবারণে পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষেরা পড়ছেন বিপাকে। আয়-রোজগারে শীতের প্রভাব পড়ায় কষ্টে আছেন দিনমজুর ও শ্রমিক-সহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এই মুহুর্তে শীত নিবারণের জন্য তাদের মাঝে গরম কাপড় হিসাবে কম্বল বিতরণ করা খুবই প্রয়োজন।
বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের প্রধান কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামান জানান, তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। কাবু হয়ে পড়ছেন রিকসা ও ভ্যান চালক সহ নিম্ন আয়ের পরিবারের সদস্যরা। এর ফলে ডায়রিয়া, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বাড়ছে। জনজীবনে দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। স্বল্প আয় থাকায় গরম কাপড় কেনা তাদের অধিকাংশেরই সামর্থের বাইরে। শীত নিবারণে এসব পরিবার সদস্যরা ঘরের ভেতরে ও বাইরে খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শরীরে গরমের ভাপ নিচ্ছেন।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তরিকুল ইসলাম জানান, এ বছর শীত মৌসুমে আমরা সরকারী ভাবে ৪ হাজার কম্বল পেয়েছি। ইতোমধ্যে এ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ২ টি পৌর সভাকে দুস্থদের জন্য কম্বল দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গরিব মুক্তিযোদ্ধা, গুচ্ছ গ্রাম ও আশ্রায়ন প্রকল্প গুলোতে আমরা কম্বল বিতরণ করেছি।
সানশাইন/সোহরাব