নাবিল গ্রুপের আত্মসাৎ করা ডালসহ দুইজন গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে নাবিল গ্রুপের ডাল ঢাকার সাভারে পৌঁছানোর কথা বলে আত্মসাৎ এর ঘটনায় কভার্ড ভ্যানসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নগরীর পবা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, সাইফুল ইসলাম শুভ (২৪) ও কবির হোসেন (৪২)। সাইফুল ইসলাম বরিশাল জেলার সদর থানার দুর্গাপুরের আব্দুর রউফ ব্যাপারীর ছেলে ও কবির হোসেন লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার উত্তর বার্টরার মৃত মোবারকের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মহানগরীর পবা থানা এলাকার নাবিল গ্রুপ তাদের পণ্য মসুর ডাল সাভার, ঢাকায় পৌঁছানোর জন্য একটি কভার্ড ভ্যান ভাড়া করে। দুপুরে আসামি চালক সাইফুল ইসলাম কভার্ড ভ্যান নিয়ে ভেড়াপোড়ায় নাবিল গ্রুপের অফিসে আসে। সেখানে ট্রান্সপোর্ট অফিসার জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সে দেখা করে ডাল বুঝিয়ে দিতে বলে। আসামি সাইফুল এর আগেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালামাল নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছিয়ে দিয়েছে বলে ট্রান্সপোর্ট অফিসারকে আশ্বস্ত করে। ট্রান্সপোর্ট অফিসার জাহাঙ্গীর আসামি সাইফুলের কথায় বিশ্বাস করে তার কভার্ড ভ্যানে ৫৬০ বস্তা মসুর ডাল দিয়ে তাকে চালান ও গেট পাশ প্রদান করে।
আসামি সাইফুল ইসলাম পরের দিন বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে সেখান হতে সভারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাতের মধ্যেই সাভারের একটি প্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোর কথা ছিলো। কিন্তু সভারের ওই প্রতিষ্ঠান থেকে নাবিল গ্রুপে ডিস্ট্রিবিউশন অফিসারকে জানায় ডালের কভার্ড ভ্যান এখনো পৌঁছাইনি। তখন আসামি সাইফুলের সাথে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। নাবিল গ্রুপের অ্যাডমিন অফিসার মাসুদ রানার উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পবা থানায় একটি মামলা রুজু হয়।
মামরা দায়েরের পর পরবর্তীতে নগর উপ-পুলিশ কমিশনার (শাহ মখদুম) নূর আলম সিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এএইচএম আসাদ হোসেনের নির্দেশনায়, সহকারী পুলিশ কমিশনার শারমিন আকতার চুমকি’র নেতৃত্বে পবা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো: মোবারক পারভেজ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল, এসআই সাহাবুল ইসলাম ও তার টিম প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত ডাল উদ্ধারসহ আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেন।
পবা থানা পুলিশের ওই টিম আরএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার উৎপল কুমার চৌধুরী পিপিএম ও তার দলের দেয়া তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে। এরপর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৬ অক্টোবর দিবাগত রাত ২টায় ঢাকার মহানগরীর শিল্পনগর থানার তেজগাঁও এলাকায় একটি ওয়ার্কসপ হতে আসামি সাইফুল ইসলাম কার্ভাড ভ্যানসহ গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ডাল আত্মসাৎ এর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যমতে অপর আসামি কবিরকে ঐ দিন সকাল সাড়ে ১০টায় লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানা এলাকা হতে গ্রেপ্তার করে। এসময় আসামির হেফাজত হতে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত ৫০ কেজি ডাল উদ্ধার হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি সাইফুল ইসলাম নিজেকে মতি মিয়া পরিচয় দিয়ে কাভার্ডভ্যানের নাম্বার প্লেট পরিবর্তন করে ডাল আত্মসাৎ করে। এরপর নাবিলের চালান পরিবর্তন করে ভুয়া ডিলার সাজিয়ে ডালগুলো বিক্রি করে। তারা পেশাদার অপরাধী, বিভিন্ন জেলা হতে বিশেষ কায়দায় সংগঠিত হয়ে এই চক্রটি এই ধরনের অপরাধ করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অবশিষ্ট ডাল ও সহযোগি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের ১৭ অক্টোবর পবা থানা পুলিশ আদালতে প্রেরণ করলে আসামিরা দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।