ভোগান্তির বন্যায় আনন্দের মাছ ধরা

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর আশেপাশের উপজেলাগুলোতে বন্যার পানিতে ফসলী জমি, অনেক ঘর-বাড়িতেও উঠেছে পানি। ভেসে গেছে অনেক পুকুর। খাল, বিল, নদী-নালা ভরেছে পানিতে। সেসব জায়গায় মাছ বেড়েছে। আর তাই তো জেলেদের সঙ্গে শখের বশে সাধারণ মানুষ জাল নিয়ে ব্যস্ত হওয়ায় শুরু হয়েছে মাছ ধরার উৎসব।
সাধারণ জেলেরা আয় বৃদ্ধি আর অন্যদের মৎস্য শিকারীদের জন্য তা আনন্দের হলেও মাছের খামারিদের জন্য তা কষ্টের।
রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষনের ফলে মাছ ব্যবসায়ীদের পুকুর ভেসে গেছে। ওইসব পুকুরের মাছ ছড়িয়ে পড়েছে বন্যার পানিতে। গোদাগাড়ী এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখা যায় খালে কিংবা ধান ডুবে যাওয়া ক্ষেতে মাছ ধরতে। এদিকে দামকুড়া কাঁকনহাট সড়কে রাস্তার পাশে জোহাখালী বিলে শত শত মানুষ এভাবেই জাল ফেলে ছোটবড় সব ধরণের মাছ শিকার করছে।
সেখানেই মাছ শিকার করে অনেকেই বিক্রি করছেন মাছ। তুলনামূলক বাজারের চেয়ে দাম কম। হাফ কেজি থেকে শুরু করে ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত রই, কাতল, মৃগেল মাছ ধরা পড়ছে জালে। কেউ মাছ ধরতে ব্যস্ত। আবার কেউ সেখানে উপস্থিত মাছ কিনতে।
রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার দামকুড়া ও কাঁকনহাট সড়কের পাশে কদমশহর এলাকায় জোহাখালী খালে বিশাল বিশাল রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্পসহ বিভিন্ন ধরণের মাছ ধরা পড়ছে। সেখানেই ভিড় করছে অনেকেই। জালে ধরা পড়া মাছ কিনে নিচ্ছেন অনেকেই। অল্প দামে কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা।
কদমশহর এলাকার স্থানীয় জমশেদ বলেন, ‘বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় ভোগান্তির শেষ নেই। এ সময় সবাই ভোগান্তিতে থাকলেও তার মধ্যেই চলছে মাছ ধরা।
রাজশাহী মহানগরীর চকপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলাম। বিকেলে গিয়েছিলেন কদমশহর এলাকায়। মাছ ধরা উৎসব দেখতে গিয়ে নিজেই অল্প দামে কিনে নেন দুই কেজি ওজনের কাতলা মাছ।
সাইফুল ইসলাম বলেন, শহর থেকে শুরু করে আশেপাশের শতশত মানুষ সড়কের ব্রিজ বা কালভার্টগুলোতে জাল নিয়ে মাছ শিকার করছেন। প্রতিবার জাল ফেলেই কিছু না কিছু মাছ উঠছেই।

সরেন মুরমু জানান, ‘বন্যার পানিতে বিভিন্ন ডোবা, পুকুর, বড় বড় ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছ বেড়িয়ে গেছে। তাই এখন যে কেউ এখন জাল ফেললেই মাছ ধরা পড়ছে। এতে আমাদের কিছু বেচাকেনা বেড়েছে। তবে জেলেদের চেয়ে মাছ ধরতে সাধারণ মানুষই বেশি মেতেছে।’
লিয়াকত হোসেন নামের এক মাছ চাষী (খামারি) জানান, ‘গত কয়েক দিনের বন্যার পানিতে তার পুকুরের চাষ করা সব মাছ বের হয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের মাছ চাষিদের সবার একই অবস্থা।’ এবার বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে বলেও জানান তিনি।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৩ | সময়: ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ