সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় মাইকিং এর উচ্চ শব্দে জনজীবন অতিষ্ঠ , বিপাকে পরীক্ষার্থীরা 

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা :

বৃহস্পতিবার (১৭ আগষ্ট) দেশব্যাপী শুরু হয়েছে এইচ.এস.সি পরীক্ষা। এ জন্য পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে দুইশত গজের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু’দিন আগে করা হয়েছে মাইকিং । সেই মাইকিং-এ বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর এক ঘন্টা পুর্ব থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার একঘন্টা পরমুহুর্ত পর্যন্ত ২০০ গজের মধ্যে কোন প্রকার আইন শুঙ্খলা অবনতি এবং উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী সকল প্রকার শব্দ যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ। এ মর্মে ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। তবে রাজশাহীর বাঘায় এ আইন মানা হয়নি। এখানে প্রতিদিনই চলছে উচ্চ স্বরে নানা রকম প্রচার মাইক। এতে করে একদিকে মানুষের জীবন অতিষ্ট, অন্য দিকে বিপাকে পড়েছে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থী-সহ পরীক্ষার্থীরা।

 

 

 

 

 

 

বাঘার স্থানীয় লোকজন জানান, এ উপজেলায় মাইকিং এর ব্যবসা খুব জম-জমাট। পাশ্ববর্তী উপজেলা গুলো থেকে এখানে মাইক ভাড়া করতে আসে। সেই সাথে স্থানীয় বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার প্রচার-প্রসার ঘটাতে যত্রতত্র ভাবে মাইকিং করে থাকে। বিশেষ করে যারা ক্লিনিক ও ডায়গোনিক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত তাদের নিজেস্ব মাইক রয়েছে। এরা হরেক রকম চিকিৎসার জন্য একেক দিন একেকজন ডাক্তারের নামে পেনড্রাইপ কিংবা কার্ডরিডারের মাধ্যমে রেকড করে প্রচার মাইক ব্যবহার করেন ।

 

 

 

 

বাঘার বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, আমার বাড়ি রাস্তার পাশে হওয়ায় সকালে ঘুম থেকে উঠেই সুখবর শুনতে পাই। রোগীদের আকৃষ্ট করতে চিকিৎসকদের প্রচার, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মুরগি, মাছ, গরু-মহিষ জবাই, ছাগলের হাট, এমনকি মোবাইলের সিম বিক্রির ধামাকা অফার এবং এলিডি লাইট বিক্রির মাইকিং এর উচ্চ আওয়াজ কানে আসে। এটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও গ্রাম এবং পাড়া মহল্লায় চলে এদের দৌরাত্ব । ভেবেছিলাম বৃহস্পতিবার এইচ.এস.সি পরীক্ষা শুরু হলে অন্তত্ব একটি মাস শান্তিতে কাটাবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি কার্যকারী হয়নি। আর হবে-কি না সেটাও বলতে পারবো না।

 

বাঘা রহমতুল্লাহ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল ইসলাম জানান, এখানে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাস্তার ধারে। বুধবার(১৬-আগষ্ট) উপজেলা মাসিক আইন শৃংখলা মিটিং-এ মাইকিং প্রচার বন্ধ রাখার বিষয়টি আলোচনায় উঠেছিলো। আমরা শিক্ষকরা দাবি রেখে ছিলাম, এক মাত্র মৃত্যু এবং সরকারি প্রচার-প্রচারণা ছাড়া নানা বিষয়ে যারা মাইকিং করে তাদের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিতে হবে । সেটি আসর নামাজ পর থেকে মাগরিব নামাজ এর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত। কারণ এ সময় গুলোতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার এইচ এসসি পরীক্ষা চলাকালে একাধিক বার মাইকিং এর আওয়াজ কানে এসেছে। এতে করে বেশি বিব্রত হয়েছে পরীক্ষার্থীরা।

 

 

এ বিষয়ে রাজশাহী জজ কোর্টের আইনজীবী ফিরোজ আহাম্মেদ রঞ্জু বলেন,পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অনুমোদিত ব্যক্তি বা সংস্থা ছাড়া শব্দযন্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। গ্রামাঞ্চল বা নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ডেসিবেল এবং রাতে ৪০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। জনস্বার্থে উ”চ শব্দ যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য।

 

 

এদিকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা: আসাদুজ্জামান বলেন, শব্দদূষণের একটি মাত্রা আছে। অদৃশ্য শব্দ দূষণে শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। মাত্রার বেশি শব্দদূষণ হলে দীর্ঘমেয়াদী কানের শ্রবণের সমস্যা, বধিরতা, রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদযন্ত্রের জটিলতা, ঘুমের ব্যাঘাত ও মন:সংযোগ নষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

 

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার বলেন, কোথাও উচ্চ শব্দ দূষণের অভিযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা চলাকালিন সময় আমি উপজেলার আড়ানী পৌর এলাকার কেন্দ্র পরিদর্শনে ছিলাম। তবে খুই শির্ঘই তিনি মাইক ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি মিটিং করবেন বলে জানান।

সানশাইন / শাহজাদা


প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৩ | সময়: ৯:০৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine