বাঘায় দুই সপ্তার মধ্যে বাজারে আসবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ

নুরুজ্জামান,বাঘা : বাংলাদেশে পেঁয়াজ একটি উচ্চমানের গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী মসলা ফসল। গত দুই বছর আগে আমাদের দেশে পেঁয়াজের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়ে ছিলো। তবে এ বছর কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে গ্রীষ্মকালীন জাতের পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। এদিক থেকে জেলার বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চল সহ সমতল এলাকায় উপজেলা কৃষি অফিসারের তত্বাবধায়নে ব্যাপক পরিমান পেঁয়াজ চাষাবাদ করা হয়েছে। আসা করা যাচ্ছে, আগামি দুই সপ্তার মধ্যে বাজারে পাওয়া যাবে নতুন জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ।

তথ্য মতে, দশ বছর আগে শীতের ফসল হিসাবে গ্রীষ্মকালীন জাতের পেঁয়াজ উদ্ভাবন হলেও কৃষকরা তেমন একটা আগ্রহ দেখায়নি । এর ফলে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত গত দুই বছর পূর্বে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দিলে সারাদেশে ব্যপক পেঁয়াজ এর সংকট দেখা দেয়। এর ফলে কৃষি অধিদপ্তরের প্রচেষ্টায় গত বছর অনেক কৃষক পেঁয়াজ চাষাবাদ করে। তবে এ বছর বিনা খরচে বীজ এবং উৎপাদনের খরচ হিসাবে নগদ টাকা দিয়ে কৃষকদের সহায়তা করা সহ লিড ফার্মারদের উপজেলা কৃষি অফিসারের পক্ষ থেকে পুরুস্কার দেয়ার ঘোষনা করায় অনেক কৃষক গ্রীষ্মকালীন জাতের পেঁয়াজ চাষে সফল হতে চলেছেন।

কৃষি গবেষক হামিদুর রহমান জানান, বরাবরই দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি মেটাতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়ে আসছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ সংকটে গত বছর থেকে আগাম কোনো তথ্য ছাড়াই হুট করে পেঁয়াজ রপ্তারি বন্ধ করেন তারা। এতে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক দাম বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারকে বেশ হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, এর আগে পেঁয়াজ এক মৌসুমে উৎপাদন হওয়ায় বছরের অন্য সময় সংকটে পড়তে হতো। বাড়তো পেঁয়াজের ঝাঁঝ ।তখন বিদেশ থেকে পেঁয়াজ এনেও ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হতোনা । তবে এ সমস্যা আগামী দিন গুলোতে আর থাকবে না। এখন থেকে প্রতি বছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে।

বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সরকারের প্রচেষ্টা হিসেবে বাঘা উপজেলায় প্রায় চার হাজার মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে সমতল এলাকার চেয়ে চরাঞ্চলে বেশি। আমরা সেই লক্ষমাত্রা অর্জনে নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বিশেষ করে এই বছরে অনাবৃষ্টি ও খরায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চারা উৎপাদন করা যথেষ্ট কষ্টকর ছিল তবুও আমরা সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গেছি। আমাদের এই প্রচেষ্টার ফলে পেঁয়াজের মূল্য এখনো সাধারণ জনগণের নাগালের মধ্যেই আছে। তিনি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে সফল চাষিদের মাঝে পুরুস্কার দিবেন বলেও উল্লেখ করেন।