সর্বশেষ সংবাদ :

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন : ‘কারিগরি উন্নয়নের’ জন্য অনলাইনে আবেদন বন্ধ

সানশাইন ডেস্ক: জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়ের সার্ভারের সিস্টেম আপগ্রেডেশনের কারণে ব্যক্তি পর্যায়ে অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছে না। সমস্যাটি আরও কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়। রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান বুধবার বলেন, “এটা পাবলিকের জন্য রেস্ট্রিক্ট করা হয়েছে। কিন্তু অথরাইজড ইউজার এবং পাসওয়ার্ডধারীরা ব্যবহার করতে পারবে। সিস্টেমের মেরামত কাজ চলছে।”
কবে নাগাদ মেরামত কাজ শেষ হবে, মানুষ আবেদন করতে পারবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা আমি বলতে পারব না। আমাদের এখানে সাতশর বেশি আইপি আছে, এর মধ্যে অর্ধেক ঠিক করা হয়েছে। বাকীগুলো চেক করা হয়নি। এটা হলে বলা যাবে।”
এর আগে সোমবার এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয় জানিয়েছে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সফটওয়্যার বিডিআরআইএস সিস্টেমে মেরামত কাজ চলমান থাকায় এবং সিস্টেমে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য কিছু পাবলিক লিঙ্ক বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে ব্যক্তি পর্যায়ে আবেদন করা যাবে না। বর্তমানে ব্যক্তি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত আবেদন শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যবহারকারীর ইউজার আইডি থেকে করতে হবে। এর বাইরে কেউ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিডিআরআইএস সিস্টেম আপগ্রেডেশন ও এর নিরাপত্তা নিশ্চিত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থা চলবে। মঙ্গলবার আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় জানিয়েছে, ব্যক্তি পর্যায়ে আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলেও রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের সার্ভার বন্ধ হয়নি। ‘কিছু কিছু জায়গা থেকে সার্ভার বন্ধ আছে মর্মে কোথাও কোথাও থেকে অভিযোগ করা হলেও উহা সত্য নয়, ইহা ভিত্তিহীন। কতিপয় বিশেষ মহল এ রকম খবর রটায় মর্মে জানা গেছে। তারা আসলে নিজেরাই কাজ করছে না অথবা কাজ করতে জানে না। সার্ভার বন্ধের খবরে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো,’ বলা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
গত ৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চে বাংলাদেশের সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি নাগরিকদের সম্পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত হয়ে আছে ইন্টারনেটে।
টেকক্রাঞ্চ জানায়, আকস্মিকভাবে বাংলাদেশি সাইট থেকে নাগরিকদের তথ্য ফাঁসের বিষয়টি বুঝতে পেরে এক গবেষক বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ‘বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিমের (বিজিডি ই-গভ সার্ট) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর বিজিডি ই-গভ. সার্ট জানায়, সরকারি যে প্রতিষ্ঠান থেকে নাগরিকদের তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে, সেই ওয়েবসাইটের দুর্বলতার বিষয়ে জুন মাসেই সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছিল।
তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলক পরে জানান, হ্যাকিং নয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে নাগরিকদের তথ্য ‘প্রকাশ্য’ হয়ে পড়েছিল। আর সেটা হয়েছিল জন্ম নিবন্ধনের ওয়েবসাইটে। রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান সে সময় দাবি করেছিলেন, তাদের সিস্টেম থেকে কোনো তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে তার তিন সপ্তাহের মাথায় ‘সিস্টেম আপগ্রেডেশনের’ কাজে হাত দিয়েছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়।


প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৩ | সময়: ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ