সর্বশেষ সংবাদ :

নেপালে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের সবার মরদেহ উদ্ধার

সানশাইন ডেস্ক: নেপালে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ১৯ যাত্রী ও তিনজন ক্রুর সবার লাশ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল। মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সর্বশেষ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে নেপাল সিভিল এভিয়েশন অথরিটি- সিএএএনর মুখপাত্র দেও চন্দ্র লাল কর্ণ জানান।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় একটি খাড়া পাহাড়ি ঢালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসস্তূপ থেকে সোমবার ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে সর্বশেষ ব্যক্তির মরদেহ খুঁজে পেয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। উড়ো জাহাজটির ২২ আরোহীর মধ্যে চারজন ভারতের, দুইজন জার্মানির এবং ১৬ জন নেপালের নাগরিক।
তাদের বহনকারী ডি হ্যাভিল্যান্ড কানাডা-ডিএইচসি-৬-৩০০ টুইন অটার বিমানটি রোববার নেপালের পর্যটন নগরী পোখারা থেকে জমসম বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। কিন্তু উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পরই বিধ্বস্ত হয়। পোখারা বিমানবন্দর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ১২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে। পোখারা থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র ও তীর্থস্থান জমসমে যাচ্ছিলেন আরোহীরা। মাত্র ২০ মিনিটেই তাদের জমসমে পৌঁছানোর কথা ছিল।
কিন্তু উড্ডয়নের পর এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে নেপাল-চীন সীমান্তে মাউন্ট ধুলাগিরি অঞ্চলের মুস্তাং জেলায় উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। মাউন্ট ধুলাগিরি বিশ্বের সপ্তম সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, যার উচ্চতা ৮ হাজার ১৬৭ মিটার। কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর প্রথমে পাইলটের মোবাইলের ‘জিপিএস লোকেশন’ ধরে উড়োজাহাজের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে রাতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত ছিল।
সোমবার ভোরে নেপালের সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা দুর্ঘটনাস্থল শনাক্ত করেন এবং সেখানে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। তবে সেখান থেকে কাউকে জীবিত উদ্ধার করার সম্ভাবনা যে ক্ষীণ, তা আগেই জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সিএএএন এর মুখপাত্র দেও চন্দ্র বলেন, ১০ জনের লাশ সোমবার কাঠমান্ডুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি ১২ জনকে মঙ্গলবার নিয়ে যাওয়া হবে।
“লাশগুলোর ময়নাতদন্তের জন্য নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচিং হাসপাতালে পাঠানো হবে।…লাশের পরিচয় শনাক্তের পর তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।” এর আগে রোববার হতাহতদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। নেপাল সরকার দুর্ঘটনার কারণ জানতে এবং বিমান চলাচল খাতের জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
মাউন্ট এভারেস্টসহ পৃথিবীর ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের মধ্যে আটটি রয়েছে নেপালে। বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা সেখানে প্রায়ই ঘটে। ২০১৮ সালে ঢাকা থেকে কাঠমাণ্ডুগামী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ত্রিভুবন বিমানবন্দরের রানওয়েতে আছড়ে পড়ে আগুন ধরে গেলে ৫১ আরোহী নিহত হন। মোট ৭১ জন আরোহী ছিলেন ওই ফ্লাইটে। ১৯৯২ সালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ কাঠমান্ডুতে অবতরণের চেষ্টার সময় পাহাড়ে ধাক্কা লেগে বিধ্বস্ত হয়। তাতে ১৬৭ আরোহীর সবাই মারা যান।


প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ | সময়: ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ