সংকট নেই, তবু বেড়েছে আলুর দাম

স্টার্ফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন কাঁচা বাজারে স্থিতিশীল থাকা আলু এখন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আলুর এখন প্রতি কেজি কিনতে লাগছে ৪০ টাকা। আলুর এ মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে ঈদের পর থেকে। ঈদের পরপর প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকায়। দেশি ছোট আলু প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঊর্ধ্বমুখী এ বাজারে এক সপ্তাহের বেশি ব্যবধানে আলুর কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা এবং দেশি আলুর কেজিতে ১০ টাকা।
সোমবার (১০ জুলাই) সরেজমিন রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার, মাস্টারপাড়া, লক্ষীপুর, কোর্টবাজার, শালবাগান, তালাইমারি এবং বিনোদপুরের বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে আগের মতোই আলুর সরবরাহ। এরপরও দাম উর্দ্ধমুখী। ঈদের আগে যে দেশি লোকাল আলু ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল বর্তমানে তা বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লক্ষীপুর, কোর্ট বাজার, শালবাগান, তালাইমারি এবং বিনোদপুরের কাঁচাবাজারে বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে যা ঈদের আগে ৩০ টাকা ছিল। তবে সাহেববাজার কাঁচাবাজারের অল্প কিছু খুরচা বিক্রেতা ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছেন।
মহানগরের মাস্টারপাড়ার খুরচা বিক্রেতা সঞ্চয় বলেন, আমার বড় আলু ৩৩ টাকায় কিনে ৩৫ টাকায় বিক্রি করছি। মাস্টারপাড়ার আরেক খুরচা বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলেন, জাতভেদে ভালো মানের বড় আলু আমি ৩৬ টাকায় কিনেছি, ৪০ টাকায় বিক্রি করছি।’
নগরীর সাহেববাজার কাঁচাবাজারের খুরচা ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, আমি ৩২ টাকা কেজি দরে বড় আলু কিনেছি, আমি ৩৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করছি।’ তিনি আরও বলেন,‘পাইকারি বাজারে যে দামে আলু কিনি তার ২ থেকে ৩ টাকা বাড়িয়ে আমি বিক্রি করি লাভের আশায়। আরও কম দামে কিনতে পারলে আমিও দাম কম রাখবো।’ সাহেববাজারে আরেক খুরচা ব্যবসায়ী জামাল বলেন, তিনি ৪০ টাকায় এক কেজি আলু বিক্রি করছেন আর ছোট দেশি আলু আকার অনুসারে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন।
এদিকে লক্ষীপুর, শালবাগান, তালাইমারি, বিনোদপুর কাঁচাবাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে সকল খুরচা বিক্রেতারাই ৪০ টাকায় এক কেজি আলু বিক্রি করছেন। লক্ষীপুর কাঁচাবাজারের খুরচা বিক্রেতা সবুজ বলেন, ১৯০ টাকায় এক পাল্লা (৫ কেজি) আলু কিনেছি, বিক্রি করছি ৪০ টাকা দরে (এক কেজি)। দেশি আলু বিক্রি করছেন ৩৫ টাকা কেজি দরে।
শালবাগান কাঁচাবাজারে খুরচা বিক্রেতা ইউনুস বলেন, এক কেজি আলু আমি ৩৮ টাকায় কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করছি।’ বিনোদপুর কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ি ফয়সল বলেন, আমি ৩৫ টাকা কেজিতে আলু কিনেছি, পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ মিটিয়ে ৪০ টাকায় এক কেজি আলু বিক্রয় করছি।
এদিকে রাজশাহীতে আলুর দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উৎপাদনের সঙ্গে আলুর এ মূল্যবৃদ্ধির কোন কোন যোগসূত্র নেই। প্রতিবছর যে পরিমাণ আলু উৎপাদিত হয় তা ব্যবহারের পরও অনেক পরিমানে উদ্বৃত্ত থাকে। তারপরেও আলুর বাড়তি চাহিদা, অন্য পণ্যের দামের প্রভাব এবং সিন্ডিকেটের আশঙ্কা আলুর দামকে আগামীতে আরও অস্থিতিশীল করে কিনা দেখার বিষয়।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছর দেশে ১ কোটি ১১ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে বেশি। ওই বছর দেশে আলু উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ টন। এ উৎপাদন দেশে আলুর চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। দেশে বার্ষিক আলুর চাহিদা ৮৫ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ লাখ টন।


প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ