দুর্গাপুরের সেই এএসআইসহ তিন জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: ভাড়াটে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আপন খালার জমি দখল ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পুলিশের সেই বিতর্কিত এএসআই আশরাফুল ইসলাম সহ তিন জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এজাহার নামীয় আসামীরা ছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামী করা হয়েছে।
দুর্গাপুর পৌর সদরের সিংগা গ্রামের ব্যবসায়ী বকুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ১৭ জুন দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এজাহার নামীয় আসামীরা হলেন, পুলিশের এএসআই আশরাফুল ইসলাম, তার ছেলে আকাশ ও ভাড়াটে ক্যাডার শরিফুল ইসলাম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ জুন বিকেলে দুর্গাপুর পৌর সদরের পূর্ব সিংগা গ্রামের আবু হানিফের স্ত্রী রাবেয়া বেগমের জমি দখল করতে যান এএসআই আশরাফুল তার ভাড়াটে ক্যাডার বাহিনী। রাবেয়া বেগম সম্পর্কে এএসআই আশরাফুলের আপন খালা হোন। সিংগা মৌজার সামান্য কিছু জমি নিয়ে খালা রাবেয়া বেগম ও খালাতো ভাই বকুল ইসলামের সাথে দীর্ঘ দিন থেকে বিবাদে জড়িয়েছেন এএসআই আশরাফুল।
ঘটনার দিন এএসআই আশরাফুল সহ তার ভাড়াটে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে জমি দখল করতে যান। এ সময় বকুল ইসলামের ভাইরা ভাই জুয়েল রানা ওই পথ দিয়ে যাওয়ার পথে এএসআই আশরাফুলকে জমি দখল কাজে বাধা দেন এবং বিষয়টি বকুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এএসআই আশরাফুল সহ তার ভাড়াটে ক্যাডাররা জুয়েল রানাকে হাসুয়া দিয়ে কোপ দেয় এবং হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও ড্রেগার দিয়ে বেধড়ক মারপিট ও নির্যাতন চালায়।
একই সময় রাবেয়া বেগম ঘটনাস্থলে উপস্থিতি হলে হাসুয়া দিয়ে রাবেয়া বেগমের মাথায় কোপ দেয় এএসআই আশরাফুল। এছাড়া লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙে দেয়। খবর শুনে বকুল ইসলাম স্ত্রী শিমু খাতুনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও মারার জন্য ধাওয়া করে এএসআই আশরাফুল। মাঝখানে স্ত্রী শিমু খাতুন বাধাদিলে তার দুই পায়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ফোলা জখম করা হয়।
ঘটনার পর স্থানীয়রা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জুয়েল রানা, রাবেয়া বেগম ও শিমু খাতুনকে উদ্ধার করে প্রথমে দুর্গাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত তিন জনকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন। কিন্তু দুই জনকে ওইদিন সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, অভিযুক্ত এএসআই আশরাফুল ইসলাম বর্তমানে বগুড়া জেলার গাবতলী থানার বাগবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রে সংযুক্ত আছেন। কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে নিজ এলাকা রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের সিংগা গ্রামে অবৈধভাবে আপন খালার জমি দখলে নিতে গিয়েছিলেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আসামীরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান মামলার আইও।


প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩ | সময়: ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ