সর্বশেষ সংবাদ :

বাঁশের সাঁকোর সাঁকোয়া এখন মডেল গ্রাম

মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: বাগমারার কৃতি সন্তান এনামুল হকের জন্মস্থান এই সাঁকোয়া গ্রাম। মাড়িয়া ইউনিয়নের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম এই সাঁকোয়া। একদা শিকদারী হাটকে ঘিরেই এই গ্রামের পরিচিতি ছিল। পরে সাঁকোয়া নামটি ছড়িয়ে পড়ে এনামুল হকের কারণে। তিনি এই গ্রামের নামে এনা সাাঁকোয়া টেক্স নামে রাজশাহীতে একটি গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন করেছেন।
এনামুল হক ওই কারখানায় প্রস্তুত সোয়েটার সহ বিভিন্ন বস্ত্র এলাকাবাসীর মাঝে বিনামূল্যে দান করেন। সেখানে সাঁকোয়া ব্র্যান্ডটি ফুটে ওঠে। এছাড়া এই গ্রামে ফায়ার সার্ভিস, কলেজ, গার্লস হাইস্কুল, হাইস্কুল, এতিমখানা সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান নির্মিত হয়েছে। এভাবে আস্তে আস্তে গ্রামটি একটি মডেল গ্রামে পরিনত হয়েছে।
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, আদি কাল থেকেই এই গ্রামের সুনাম ছিল এলাকাজুড়ে। গ্রামের অধিকাংশ লোকজন অত্যন্ত সহজ সরল ও বিনয়ী। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে একটি বিশাল খাল বা ডারা। খালটি ভবানীগঞ্জে ফকিরানী ও আত্রাইয়ের আহসানগঞ্জ হাটে আত্রাই নদীকে সংযুক্ত করেছে। এই খাল দিয়ে পাল তোলা বড় বড় বানিজ্য নৌকা আসত। নৌকাগুলো সাঁকোয়া সহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে নোঙ্গর করত এবং পান -পিয়াজ সহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রী সংগ্রহ করত।
তবে সাঁকোয়া গ্রামের লোকজন সহজ সরল ও বিশ্বস্ত হওয়ায় বানিজ্য নৌকার মালিকরা তাদেরকে বিভিন্ন কাজে কর্মে নিয়োগ করত। সেই আমলে সাঁকোয়া গ্রামের অপর প্রান্তের গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। ঝড় বৃষ্টি সহ নানান কারণে সেখানে নিয়মিত খেয়া নৌকা পাওয়া যেত না। গ্রামের লোক এ নিয়ে নানা দুর্ভোগ পোহাত। তাদের ওই দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসে ওই বানিজ্য নৌকার মালিকরা। তারা গ্রামবাসীকে সহযোগিতা করে সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেন। প্রাচীন কালের সেই বাঁশের সাঁকো থেকে গ্রামটির নাম সাঁকোয়া হয়েছে বলে আজো জনশ্রুতি আছে। এই গ্রামের কৃতি সন্তান এনামুল হক।
তিনি পর পর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে গ্রামটিকে একটি মডেল গ্রামে রুপান্তর করেছেন। তারই ছোট ভাই মনিমুল হক প্রাচীন সেই ইতিহাস ঐতিহ্য ও স্মৃতি এলাকাবাসীর মাঝে চিরজাগরুক করে রাখতে সম্প্রতি শিকদারী বাজারে লোহা ও ইস্পাত দিয়ে একটি সাঁকো নির্মাণ করে এলাকাবাসীর প্রশংসা অর্জন করেন।


প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ | সময়: ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ