রাসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদ পুনর্মিলনী মতবিনিময় সভায় ‘আগামীতে অব্যাহতভাবে কর্মসংস্থান সৃজন করতে চাই’ রাসিক মেয়র

স্টাফ রিপোর্টার:
আসন্ন ২১ জুন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, আগামীতে নির্বাচিত হলে রাজশাহীতে অব্যাহতভাবে কর্মসংস্থান সৃজন করতে চাই। ইতোমধ্যে রাজশাহী বিসিক শিল্পনগরী-২ এর কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হবে। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চামড়া শিল্প পার্ক অনুমোদন দিয়েছেন। এটিও বাস্তবায়ন করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক নির্মিত হয়েছে। সেখানে আমাদের ছেলে-মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আইটি খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বিদেশে পাঠাতে চাই। নগরীতে ১৮৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহীতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন হচ্ছে। রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাই।

 

 

 

 

 

শনিবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে রাজশাহী কলেজ অডিটোরিয়ামে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্র তৈরি করে রেখেছি। সেটি আগামীতে বাস্তবায়িত হবে। কাজগুলো হচ্ছে রাজশাহী থেকে কলকাতা সরাসরি ট্রেন, বাস যোগাযোগ চালু করা। ভারতের মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান থেকে রাজশাহী হয়ে আরিচা হয়ে ঢাকা পর্যন্ত নৌ রুট চালুর বিষয়ে কাজ চলছে। এটি চালু হলে ভারত থেকে পাথর, ফ্লাই এশ, ফলসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি ও এদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানী করা সম্ভব হবে। ফলে রাজশাহীর ব্যবসা বাণিজ্যের পরিধি বৃদ্ধি পাবে।

 

 

 

 

খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, রাজশাহী শুধু বাংলাদেশে নয়, এশিয়ার মধ্যে অন্যতম পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ রাজশাহীর ভূয়সী প্রশংসা করছেন। এটি আমাদের সকলের অর্জন, এটি গর্বের বিষয়। এটি তো এমনি এমনি হয়নি। আমি সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন সহ সকল কার্যক্রমে নিরবিচ্ছিন্ন মনিটরিং করে আসছি। যার সুফল আমরা পেয়েছি। মেয়র আরো বলেন, ২০১৯ সালে প্রায় ২৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পের ১২০০ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। আরো ১৫০০ কোটি টাকা রয়েছে। আগামীতে মেয়র নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে আরো তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ নিয়ে আসা হবে। তা দিয়ে আরো ব্যাপক উন্নয়ন হবে। আমি মেয়র হয়েছিলাম অনেক কাজ দেখাতে পেরেছি। আরো অনেক কাজ বাকি আছে। আগামীতে সেগুলো করতে চাই। নগরীর আয়তন বৃদ্ধি করা হবে।

 

 

 

 

মেয়র আরো বলেন, রাজশাহীকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। পর্যটকদের আকর্ষণ করতে রাজশাহীর পদ্মাপাড়কে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পদ্মায় জেগে ওঠা চরে বঙ্গবন্ধু রিভার সিটি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মেয়র আরো বলেন, আমি কথা দিয়েছিলাম রাজশাহী থেকে কক্সবাজার বিমানের ফ্লাইট চালু করবো। সেটি চালু করেছি, গত ছয় মাস ধরে ভালোমতোই চলছে। শাহ মখদুম বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের টেন্ডার হয়েছে। বিমানবন্দরের রানওয়ে ৭ হাজার ফুট থেকে ১০ হাজার ফুটে উন্নীত করা হবে। ।  রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল রাজশাহীর সকল উন্নয়ন স্থবির হয়ে যায়। সেময় সময়ে বিএনপির মেয়র থাকাকালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া পড়ে থাকতো। বেতনের জন্য তাদের আন্দোলন করতে হতো। সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। সেখান থেকে সিটি কর্পোরেশনের টেনে তুলে স্বাবলম্বী করা হচ্ছে। এখন মাসের শুরুতেই বেতন ভাতা পান সিটি কর্পোরেশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সবার পবিত্র দায়িত্ব। কাকে দিয়ে উন্নয়ন হবে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে, সেটি বুঝতে হবে।

 

 

 

 

অনুষ্ঠানের রাসিকের প্রকৌশলী কামাল পারভেজ সবুজ বলেন, রাজশাহী নগরীর এখন উন্নয়নের রোল মডেল। পরিচ্ছন্ন ও আলোকায়নে দেশ বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে রাজশাহী। এই উন্নয়নের কারিগর আমাদের নগরপিতা জননেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি আমাদের গর্ব ও অহংকার। তাঁর কারণে রাজশাহীকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।

 

 

 

 

 

আখতার হোসেন বলেন, করোনকালীন সময়ে নগরপিতার উদ্যোগে আমরা করোনারোগীদের বিনামূল্যে সেবা দিয়েছি। যে সময় পরিবারের সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি ফেলে চলে যেত, পাশে থাকতো না। সে সময় মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে আমরা করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের অক্সিজেন সেবা পৌছে দিয়েছি, ওষুধ ও খাদ্য পৌছে দিয়েছি। স্বাস্থ্যকর্মী জোসনা খাতুন বলেন, মেয়র মহোদয় যে উন্নয়ন করেছেন, ভোটের জন্য তাকে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে না। উনি যে কাজ করেছেন, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ভালোবেসে আবারো মনোনয়ন দিয়েছেন। নগরপিতা রাজশাহীকে বিশ্বের বিস্ময় হিসেবে গড়ে তুলছেন। তিনি যে উন্নয়ন করেছে, তা তুলনাহীন। আমরা নগরপিতার পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকো। অনুষ্ঠানে রাসিকের তাজুল ইসলাম, আখতার হোসেন, প্রিয়া, আহসান হাবীব বুলবুল, রেশমা, জোসনা, মোঃ মহিউদ্দিন মৃদূল সহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

 

 

 

 

 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোঃ মশিউর রহমান। অনুষ্ঠান মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রাসিকের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিন, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মোঃ নূর-ই-সাঈদ, বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএমএ আঞ্জুমান আরা বেগম, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু, চীফ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার আজিজুর রহমান। সঞ্চালনা করেন রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু।

 

 

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৩ | সময়: ৯:০১ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর