সর্বশেষ সংবাদ :

অসময়ে পদ্মায় ভাঙনের মুখে চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়

নুরুজ্জামান, বাঘা : রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় নদীর পাড় রক্ষায় শুরু হয়েছে নদী খনন (ডেজিং) প্রকল্প। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অসময়ে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। বর্তমানে ভাঙ্গনের মুখে শত-শত বিঘা জমি সহ-উপজেলার চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। তবে এই মুহুর্তে ভাঙ্গনের চেয়ে বেশি সমস্য সৃষ্টি করছে ফাল্গুনের বাতাসে উড়ে আসছে বালু । ফলে স্কুলে ক্লাস করতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ফালগুনের দক্ষিনা হাওয়ায় বালু উড়ে আসছে স্কুল কক্ষে। সেই বালু পড়ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে। এর ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে থাকতে পারছে না। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে নিয়মিত ক্লাসের পড়াশুনা।
চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, এই স্কুলে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৫৩৭ জন। সম্প্রতি নদী ডেজিং প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় অসময়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে অনেক মানুষের ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। আমরা চার কক্ষের টিনের ঘর সরিয়ে নিয়েছি। স্কুলের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবন ও টিনের আরো ৪ কক্ষ ঘর পদ্মার ভাঙন থেকে ৫ মিটার দূরে অবস্থান করছে। বিষয়টি প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তারপর বালু উড়তে শুরু করেছে, এতে বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডিএম মনোয়ার বাবলু দেওয়ান বলেন, অসময়ে ভাঙনের কারণে চকরাজাপুর, কালিদাসখালী, লক্ষ্মীনগর মৌজার চিহ্ন হারিয়ে গেছে। বর্তমানে এগুলোর স্থান বলতে কিছু নেই। সম্পূর্ণটা নদীগর্ভে চলে গেছে। তবে স্কুল ভবনটি স্থানান্তর না করলে অসময়ের ভাঙনে যে কোনো সময় নদীগর্ভে চলে যাবে।
চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়া খাতুন বলেন, দুই দিন থেকে পদ্মার মধ্যে জেগে উঠা চরের বালু বাতাসে উড়তে শুরু করেছে। এই বালু উড়ে এসে চোখে মুখে পড়ছে। জানালা দরজা বন্ধ করেও বালু রোধ করা যাচ্ছেনা। এর ফলে আমরা ক্লাসে ঠিকভাবে বসে ক্লাস করতে পারছিনা।
চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, অসময়ে পদ্মার ভাঙনের মুখে পড়েছে চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়। পদ্মার ভাঙন থেকে ৫ মিটার দূরে রয়েছে স্কুলটি। যে কোনো সময় পাকা ভবন পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন এই স্কুলটি ১৯৭৮ সালে স্থাপিত হয়েছে। ভাঙনের কারনে ১৯৯৮,২০১২ ও ২০১৮ সালে স্থানান্তর করা হয়। এবারও অসময়ে পদ্মার ভাঙনের কারণে স্থানান্তর করতে হবে। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার বলেন, আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে সাথে করে স্কুল পরিদর্শন করেছে। ভাঙ্গনের ঘটনা সত্য। পরিস্থিতি সাপেক্ষে স্কুলটি সরিয়ে নেয়া হবে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩ | সময়: ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ