জেম হত্যায় নিরপরাধদের আসামি করার অভিযোগ এমপি বিরুদ্ধে

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগ লীগ নেতা ও শিবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খায়রুল আলম জেম হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন। এতে তিনি স্বার্থ হাসিলের জন্য নিরাপরাধ নেতাকর্মীদের হত্যা মামলায় আসামি অভিযোগ তুলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদের বিরুদ্ধে।
আলমগীর হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা আওয়ামী লীগের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর জেলা যুবলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে টানা ৯ মিনিট কথা বলেন।
ওই লাইভে আলমগীর নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী দাবি করে বলেন, ‘‘আবদুল ওদুদ আপনি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তারপরেও আমরা আপনাকে অভিভাবক হিসেবে মেনে নিয়েছি। কিন্তু জেম হত্যাকান্ড নিয়ে আপনি অপরাজনীতি শুরু করেছেন। আপনার বিরোধী মতের আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। যারা প্রকৃত খুনি, তাঁদের আপনি চিনেন, পুলিশও চিনে।
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাধারণ মানুষও দেখেছে। তারপরেও আপনি স্বার্থ হাসিলের জন্য হয়রানি করতে ইচ্ছেমতো আসামি করেছেন। এতে দল এবং সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা চাই আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ জেম হত্যার প্রকৃত আসামি সবাই ধরা পড়ুক এবং ন্যায়বিচার হোক। বিএনপি থেকে এসে অপরাজনীতি বন্ধ করুন। বিষয়টি দলীয় প্রধানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিবেচনা করা উচিত।’
এ নিয়ে জানতে শনিবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিগত জোট সরকারের আমলে আমার নামে ২৮টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। সবগুলো মামলায় খালাস পেয়েছি। আমাদের প্রতিপক্ষ হারুন-পাপিয়ারা মামলাগুলো করাত। আর এখন আওয়ামী লীগের এমপি থেকেও দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।’
আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ‘আমার ছেলে আজম এবং ভাতিজা অভি হত্যাকাণ্ডের কথা শুনে হাসপাতালে দেখতে যায়। এরপরেও তাদের আসামি করা হয়েছে। তারা এখন ফেরারি। এমন অসংখ্য আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে এ হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমরা চাই খুনিদের বিচার হোক, নিরাপধীরা মুক্তি পাক।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওদুদ বলেন, ‘মামলার বাদী যাকে অপরাধী মনে করেছে তাকে আসামি করেছে। এতে আমার কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগ নেতা খায়রুল আলম জেমকে (৫০) চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের উদয়ন মোড়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ২৩ এপ্রিল নিহতের ভাই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য মোখলেসুর রহমানসহ ৪৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় এখন পর্যন্ত ১৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।


প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৩ | সময়: ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ