হারভেস্টার মেশিনে আখ কাটায় সাশ্রয় হবে একর প্রতি ৫-৭ হাজার টাকা

লালপুর প্রতিনিধিঃ
নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কৃষি ফার্মে জমিতে উৎপাদিত আখ চলতি মৌসুম থেকে কাটা হবে হারভেস্টার মেশিনের। যেখানে শ্রমিকদ্বারা প্রতি একর আখ কাটতে খরচ হয় ৯-১০ হাজার টাকা সেখানে এক একর পরিমাণ জমির আখ মেশিনে কাটতে খরচ পড়বে মাত্র ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এতে প্রতি একরে সাশ্রয় হবে ৫-৭ হাজার টাকা। ৩৫-৪০ জন শ্রমিকের ২০ টন আখ কাটতে সময় লাগে এক দিন। এই হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে প্রতি ঘন্টায় ২০ টন আখ কর্তন করা সম্ভব। বর্তমানে কৃষিতে শ্রমিক কমিয়ে সবকিছুতেই যন্ত্রের ব্যবহার হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের একমাত্র ভাড়ী শিল্পপ্রতিষ্ঠান নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে আখ কাটায় একদিকে যেমন উৎপাদন ব্যয় ও সময় কমবে তেমনি চিনির উৎপাদনও বৃদ্ধিপাবে বলে জানিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ।

 

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল সূত্রে জানা যায়, ৩৫-৪০জন শ্রমিকের আখ এই মেশিনে প্রতি ঘন্টায় কাটতে পারে। যেখানে শ্রমিকদ্বারা একর প্রতি আখ কাটতে খরচ হয় ৯-১০ হাজার টাকা সেখানে মেশিনে এক একর জমির আখ কাটতে খরচ পড়বে মাত্র ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। হাত দিয়ে যখন আখ কাটা হয় তখন গোড়া থেকে ২-৩ ইঞ্চি উপর দিয়ে কাটে। এতে আখের সুগার নষ্ট হয়ে যায়, সেই সঙ্গে আখ পরিষ্কারও ঠিকমতো হয় না। আর এই মেশিন আখের গোড়া থেকে কর্তন করা যাবে। একই সঙ্গে আখ পরিষ্কার-পরিছন্ন হয়ে বের হবে। আখ কাটতে শ্রমিকদের অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এই মেশিন থাকলে তাদের কষ্ট লাগব হবে।কৃষির যান্ত্রিকীকরণের ফলে একদিকে যেমন উৎপাদনের পরিমাণ বাড়বে অন্যদিকে তেমনি উৎপাদন ব্যয় ও সময় কমবে।

 

 

রফিকুল ইসলাম, রোকনুজ্জামনসহ স্থানীয় আখ চাষীরা বলছেন, দিন দিন শ্রমিকের মুজুরি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার পরেও জমিতে উৎপাদিত আখ কাটার সময় শ্রমিক সঙ্কট দেখা দেয়। অধিক মুজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যায় না। আখ কাটা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় আখ চাষীদের। আখ উৎপাদনে খরচ বেশি হওয়ায় অনেক চাষি আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। গম কাটার মেশিন দেখেছি। এই প্রথম আখ কাটার মেশিন দেখলাম। শুনেছি ৩৫-৪০ জন এক দিনে যে পরিমাণ আখ কাটতে পারে এই মেশিনটি মাত্র এক ঘন্টায় সেই পরিমাণ আখ কাটতে পারে। সময় ও খরচ কম লাগে আবার আখগুলিও পরিষ্কার-পরিছন্নভাবে ছোট ছোট টুকরো হয়ে বের হয়। এই প্রযুক্তি (হারভেস্টার মেশিন) নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে আসায় অনেক আখ চাষি আবারও আখ চাষে আগ্রহী হবে বলে জানান তারা।

 

 

 

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল আজম বলেন, প্রতিবছর আখ মাড়াই মৌসুমে মিলের ফার্মে আখ কর্তন করতে গেলে নানা জটিলতায় পড়তে হয়। সব থেকে বড় সমস্যা শ্রমিক পাওয়া। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কৃষি ফার্মকে যান্ত্রিকরনের লক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ও চেয়ারম্যান এই হারভেস্টার মেশিনটি নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কৃষি ফার্মকে ব্যবহার করে দিয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। বর্তমানে কৃষিতে শ্রম কমিয়ে সবকিছুতেই যন্ত্রের ব্যবহার হয়েছে। হারভেস্টার মেশিন আখের গোড়া থেকে কর্তন করা যাবে। এতে সময় কম লাগবে, শ্রমিক খরচ কমবে একই সঙ্গে আখ পরিষ্কার-পরিছন্ন হয়ে বের হবে। চিনি উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ফলে একদিকে যেমন উৎপাদনের পরিমাণ বাড়বে অন্যদিকে তেমনি উৎপাদন ব্যয় ও সময় কমবে। একই সঙ্গে ফসলের অপচয়ও কমছে। আখ কাটতে শ্রমিকদের অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এই মেশিন থাকলে তাদের কষ্ট লাগব হবে বলেন মনে করেন এই কর্মকর্তা।

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৩ | সময়: ৪:১১ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine