আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বানাতে পুকুর ভরাট

স্টাফ রিপোটার, গোদাগাড়ী : পরিবেশ আইনের বিধান অনুসারে যে কোনো জলাশয় ভরাট নিষিদ্ধ। কিন্তু সে আইনের তোয়াক্কা না করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ভরাট করা হচ্ছে একটি পুকুর। মুজিববর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বানাতে আইন লঙ্ঘন করে খোদ উপজেলা প্রশাসন পুকুরটি ভরাট করছে বলে জানা গেছে।
এই পুকুরটির অবস্থান গোদাগাড়ী সদর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর মৌজায়। শূন্য দশমিক ৫৮ একরের এই পুকুরটি ১৮৮ নম্বর জেএল এর ২৮৫ নম্বর দাগে অবস্থিত। এটি এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি। উপজেলা ভূমি অফিসের খাতার রেকর্ড অনুযায়ী, এই জমির শ্রেণি পুকুর।
পরিবেশ আইন-১৯৯৫ ও জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ এর বিধান অনুসারে যে কোনো জলাশয় ভরাট নিষিদ্ধ। ব্যক্তিগত পুকুর হলেও তা জলাধারের সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তা ভরাট করা যাবে না। অথচ খোদ উপজেলা প্রশাসনই কয়েকদিন ধরে পুকুরটি ভরাট করছে। প্রায় আধা কিলোমিটার দূর থেকে আবাদী জমির মাটি কেটে ট্রাক্টরে করে এনে এখানে ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সরকারি খাস এই পুকুরটিতে প্রায় সারাবছরই পানি থাকে। ওই পানিতে জমির আবাদ হয়। ঘর গৃহস্থলির কাজ হয়। শুধু শুষ্ক মৌসুমের কয়েকমাস সেখানে পানি থাকে না। হঠাৎ এই পুকুরের ওপর কয়েকদিন আগে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। এই জমির মালিক সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক। এরপর থেকে সেখানে মাটিভরাট শুরু হয়েছে। পুরনো এই পুকুরটি ভরাট করে ফেলা হচ্ছে দেখে তাদের মন খারাপ।
উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মচারী নিশ্চিত করেছেন, ওই জমির শ্রেণি পুকুর। সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি করা হবে। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে তারা পুকুরটি দেখে এসেছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানও অবগত। এখন সেখানে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। মাটি ভরাট করা হলে সেখানে ঘর নির্মাণ করা হবে।
জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে দেওয়ার ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সবুজ হাসানের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিপুল কুমার মালাকার বলেন, পুকুরের ওপর ঘর নির্মাণ করা হবে কি না তিনি জানেন না। উপজেলা প্রশাসন যখন তাঁর কাছে ভূমি হস্তান্তর করবে, তখন তিনি বলতে পারবেন।
ইউএনও মো. জানে আলম দাবি করেছেন, ওই পুকুরে আবাসন প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হবে না। তিনি বলেন, ‘ওই পুকুর অনেক আগেই স্থানীয়রা ভরাট করে ফেলেছেন। তারা দখলে রেখে ভোগদখল করতেন। আমরা সেটি উদ্ধার করেছি। এ জন্য লোকজন সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিচ্ছে। আমরা কোন পুকুর ভরাট করছি না। জমির শ্রেণি পুকুর কি না সেটাও জানি না।’


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৩ | সময়: ৬:০২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ