সর্বশেষ সংবাদ :

৯ রানে জিতেলো বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক

যথারীতি বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা প্রকাশ পেলো। শুরুটা দুর্দান্ত করেও শেষ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসের সামনে মাত্র ১৪৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তবে ভালো বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ১৩৪ রানে আটকে দিলে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৯ রানে জয় পায় টিম টাইগার। মূলত তাসকিন আহমেদের করা ৪ ওভারে ২৫ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট বাংলাদেশ দলের জয়ে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। এছাড়া হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ১৫ রানে ২ উইকেট,সাকিব ১টি ও সৌম্য সরকার ১টি উইকেট লাভ করেন।  নেদারল্যান্ড দলের অ্যাক্রারম্যান ৪৮ বলে ৬২ রান করলেও  অন্য কোন ব্যাটসম্যান বড় রান না করতে পারায় হারতে হয় তাদের।

 

আজ নেদারল্যান্ড দলকে ব্যাটিংয়ের শুরু থেকে চেপে ধরে বাংলাদেশী বোলাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালে খেলায় কিছুটা পিছিয়ে পড়ে নেদারল্যান্ড। এক পর্যায়ে ৫৯ রানে ৫ উইকেট ও ১০১ রানে ৯ উইকেট পড়লে জয়ের দিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে শেষ উইকেট জুটিতেভ্যান মিকারানের ১৪ বলে ২৪ রান কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি করে খেলায়। শেষ বলে মিকারান আউট হলে ১৩৫ রানে থামে নেদারল্যান্ডের ইনিংস।

 

 

এর আগে হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ ওভারে উদ্বোধনী জুটিতেই ৪৩ রান তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর নিয়মিত বিরতিতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার মিছিল বাড়তে থাকায় রান আর আশানুরূপ বাড়েনি। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৪৪ রানে থেমে যেতে হয়েছে টাইগারদের। সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। শেষ দিকে ১২ বলে ২০ রান করে বাংলাদেশের রান ১৪০- এর কোটা পার করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

 

 

 

বাংলাদেশের অধিকাংশ উইকেটই পড়েছে বড় শট খেলতে না পারার কারণে। সৌম্য, শান্ত, লিটন, সাকিব, আফিফ, নুরুল হাসান কিংবা তাসকিন- সবাই ক্যাচ আউট হয়েছেন বড় শট খেলতে গিয়ে। বোঝাই যাচ্ছে, তাদের শট মাঠ পেরিয়ে যাওয়ার মত শক্তিশালী ছিল না। অথচ, টি-টোয়েন্টিতে এটাই বেশি প্রয়োজন।

 

 

 

টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর দুই ওপেনার মোটামুটি ভালোই সূচনা এনে দিয়েছিলেন। ৪৩ রান করেছিলেন তারা ৫ ওভারে। কিন্তু ৬ষ্ঠ ওভার থেকেই বিপর্যয়ের সূচনা। ৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন শান্তও।

 

 

 

 

এরপর ভরসা যা ছিল লিটন এবং সাকিবের ওপর। কিন্তু এই জুটিও চরম হতাশ করলো বাংলাদেশের সমর্থকদের। ৯ম ওভারের চতুর্থ বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন লিটন দাস। পরের ওভারেরই প্রথম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের ওপর অবিশ্বাস্য ক্যাচের শিকার হন সাকিব আল হাসান।

 

 

 

৬৩ রানে পড়ে বাংলাদেশের ৪ উইকেট। এরপরই বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। উইকেট ঢেকে দেয়া হয় ত্রিপল দিয়ে। এ সময় বাংলাদেশের রান ছিল ৯.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৭০ রান।সাকিব যে জায়গা দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন, পরের বলে আফিফ ঠিক একই জায়গা দিয়ে ছক্কা মারেন। তিনি ব্যাট করছেন ৬ রান নিয়ে। তার সঙ্গে ১ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে আছেন ইয়াসির আলী রাব্বি।

 

 

 

বিশ্বকাপের আগে ওপেনিং নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়েছিল। মেকশিফট ওপেনার দিয়ে খেলানো হলো। মেকশিফট ওপেনিংয়ে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বিশ্বকাপ দল থেকেই বাদ পড়তে হলো সাব্বির রহমানকে। অন্য যাকে ওপেনিংয়ে নামানো হতো, সেই মেহেদী হাসান মিরাজকে একাদশেই রাখা হয়নি। শেষ পর্যন্ত অফ ফর্মে থাকা দুই ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সৌম্য সরকারকে দিয়েই বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওপেনিং করানো হলো। দু’জনের সূচনাটা হয়েছিল বেশ ভালোই। পাওয়ার প্লেকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টাই করেছেন সৌম্য এবং শান্ত।

 

 

 

 

 

প্রথম ৫ ওভারে কোনো উইকেট তো দিলেনই না, বরং স্কোরবোর্ডে রান তুললেন ৪৩টি। কিন্তু সৌম্যর দুর্ভাগ্য, পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের, তথা ৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই পুল করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু সেভাবে বলটি ব্যাটে আসেনি। দ্রুত গতির বলটি হালকা ইনসুইংয়ের কারণে বল মাঝ ব্যাটে না এসে উপরের অংশে লেগে যায়। যার ফলে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচে পরিণত হন সৌম্য। ৪৩ রানের মাথায় পড়লো প্রথম উইকেট এবং ১৪ বলে ১৪ রান করে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। শেষ পর্যন্ত পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশের রান হলো ১ উইকেট হারিয়ে ৪৭।

 

 

 

 

৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলটিতে শট খেলতে গিয়ে শট লেগে বল তুলে দেন শান্ত। ফন বিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে ২০ বলে করেন ২৫ রান। এরপর ৯ম ওভারের চতুর্থ বলে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান লিটন। বলটি হালকা উঠে গেলে সৌম্যর মতই ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাস। ১১ বল খেলে ৯ রান করেন তিনি। সাকিব আল হাসানও আউট হলেন দুর্ভাগ্যজনকভাবে। ১৯ বছর বয়সী লেগ স্পিনার শারিজ আহমেদের বলে স্লগ সুইপ করে ছক্কা হাঁকাতে যান সাকিব। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনের ওপর অনেকটা লাফিয়ে উঠে সাকিবের ক্যাচটি ধরে নেন বাস ডি লিডি। ৯ বলে ৭ রান করে বিদায় নেন সাকিব।

 

 

 

 

সাকিব আউট হওয়ার পরই বৃষ্টি নামে। ৫ মিনিট বন্ধ থাকার পর আবার খেরা শুরু হয়। এরপর ইয়াসির আলী রাব্বি বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫ বল খেলে মাত্র ৩ রান নিয়ে বিদায় নেন তিনি। নুরুল হাসান সোহান খেলেন ১৮ বলে ১৩ রানের ইনিংস। এক পাশ আগলে রেখে আফিফ হোসেন ধ্রুব খেলে যান কিছুক্ষণ। শেষে তিনিও ২৭ বলে ৩৮ রান করে বিদায় নেন। তাসকিন আহমেদ আসলেন আর গেলেন। গোল্ডেন ডাক মেরে বিদায় নেন। ১২ বলে ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক। ২টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মারও মারেন তিনি।

ম্যান অফ দ্য ম্যাচ তাসকিন আহমেদ।

 


প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২২ | সময়: ১:৫৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine