সর্বশেষ সংবাদ :

রাজশাহীতে আ’লীগ প্রার্থীর পক্ষে একাট্টা জনপ্রতিনিধিরা

স্টাফ রিপোর্টার : চলতি সপ্তাহের শেষেই আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হচ্ছে যাচ্ছে জেরা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে তার সরগরম সিটি, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা। সাধারণ মানুষ এ নির্বাচনে ভোটার না হলেও তাদের মধ্যেই প্রভাব পড়েছে ভোটের হাওয়া। রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এখন ইউনিয়ন পর্যায়ের চায়ের স্টল থেকে শুরু করে হাটবাজারে চলছে তুমুল আলোচনা। প্রার্থীরা ভোটারদের সঙ্গে করছেন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ। মহানগরী এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রার্থীদের পোস্টার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সব মিলিয়ে শেষ সপ্তাহে এসে জমে উঠেছে এ নির্বাচন।
রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল। আর তার পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন রাজশাহী জেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দিনরাত তারা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। জেলা এবং মহানগরীর জনপ্রতিনিধি ভোটারদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। দলের প্রার্থীকে জেতাতে নেতাকর্মীরা এখন একাট্টা।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মীর ইকবাল ছাড়াও এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান আকতার, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন এবং আনোয়ার ইকবাল বাদল। ভোট নিয়ে এরইমধ্যে পারস্পারিক কাদা ছুড়োছুড়িও হচ্ছে।
তবে ভোটাররা বলছেন, চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মীর ইকবাল এবং আক্তারুজ্জামানের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। যদিও আওয়ামীগের নেতার বলছেন এ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে তারা একাট্টা হওয়ায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীল মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল। তাইবলে বসে নেই বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আকতার। আওয়ামী লীগের একটি অংশের দাবি আকতারও ভোট টানবেন কিছুটা। কারণ দলের একটি অংশ গোপনে তাকে সমর্থণ দিচ্ছেন এমন আভাসও মিলছে মাঠ পর্যায়ে।
তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মীর ইকবালের পক্ষে সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন, আমানুল হক দুদু, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাবলু, মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদ ও আলফোর রহমানসহ আওয়ামী লীগ সমর্থিত উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। এ জেলার এমপিরা প্রকাশ্যে না থাকলেও দলীয় প্রার্থীর পক্ষেই সায় দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজশাহী জেলার দুইজন এমপি বলেন, দলীয় সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনায়ন দিয়েছেন তার থেকে এক চুলও বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষে মীর ইকবালের জন্য সার্বক্ষণিক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহসভপাতি রেজাউল ইসলাম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লেমন, উপ দফতর সম্পাদক পঙ্কজ দেসহ কমিটির নেতারা।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল বিশাল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন উল্লেখ করে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, মীর ইকবাল ৫৬ বছর থেকে রাজনীতি করছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মীর ইকবালের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর তিনি প্রতিকূল অবস্থায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের দুর্দিনের পরীক্ষিত সৈনিক।
তিনি বলেন, মীর ইকবালকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে রাজশাহীর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা একাট্টা। সবাই দিনভর কাজ করছেন। নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা এ নির্বাচনের ভোটার। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এসব প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ। এ কারণে মীর ইকবালের জয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। তিনিই বিজয়ের মালা পরবেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মীর ইকবাল বলেন, দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন, এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। নর্বাচিত হলে রাজশাহী জেলা পরিষদের উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই। এ জেলা পরিষদকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করব। আশা করছি, ভোটাররা আমাকে সমর্থন দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ১৮৬ জন। আগামী ১৭ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত জেলার ৯টি কেন্দ্রে একযোগে এ ভোট গ্রহণ করা হবে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২২ | সময়: ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর