মঙ্গলবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৩ ইং, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বং।
নুরুজ্জামান,বাঘাঃ
বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। যার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । এমনটি উল্লেখ করে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত সচিব জি.এস.এম জাফর উল্লাহ বলেন, আমরা এই চেতনাকে ধারণ করে সকল মানুষ পারস্পারিক নৈতিকতা ভাগাভাগির বিনিময়ে একসাথে বসবাস করতে চাই। সোমবার রাতে বাঘা উপজেলার নারায়নপুর পুজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে সার্বজনীন শারদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন একঝাঁক উর্ধতন অফিসার যথাক্রমে-আব্দুল বাতেন (বি.পি.এম)বার ডি.আই.জি রাজশাহী, যুগ্ন-সচিব শ্রী রথীন্দ্রনাথ দত্ত মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়, আব্দুল জলিল জেলা প্রশাসক রাজশাহী, এ.বি.এম. মাসুদ হোসেন বি.পি.এম.বার রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার, সহকারি পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের, বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, সহকারি কমিশনার ভুমি মোহাম্মদ জুয়েল আহাম্মেদ ও বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)সাজ্জাদ হোসেন।
উপজেলা কেন্দ্রীয় পুজা উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব কুমার সাহার সঞ্চলনা ও সুজিত কুমার ওরুপে বাকু পান্ডের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় জাফর উল্লাহ বলেন,রাজনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষানীতি, যুবনীতি সবকিছুর পেছনে অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্খা প্রতিয়মান। আমরা চাই সত্য , ন্যায় ও শান্তি রক্ষার মাধ্যমে সকল ধর্মের মানুষকে একসাথে নিয়ে চলতে। এর ফলে দেশ আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
উক্ত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডি.আই.জি আব্দুল বাতেন বলেন, এ বছর অত্যান্ত শান্তি শৃংঙ্খলার মধ্য দিয়ে সারাদেশে পুজা উৎযাপিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই।
অপর দিকে বাঘার কৃতি সন্তান ও ও বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক যুগ্ন-সচিব শ্রী রথীন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, আমার ধর্ম মানবতা । দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে। আমি এই জনপদের মানুষ হিসাবে প্রতিবছর শারদীয় দূর্গোৎসব এবং রমজানের ঈদে বাড়ি এসে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে কাপড় বিতরণ করে থাকি। এবার দুই হাজার মানুষের তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ ভাগ হিন্দু এবং ৭০ ভাগ মূসলমান কাপড় পাবে। তিনি পদ্মা সেতু-সহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফিরিস্তি টেনে বলেন, বিগত সময়ে ঢাকা থেকে বাড়ি আসতে সময় লাগতো সাত ঘন্টা। অথচ এবার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় মাত্র চার ঘন্টায় বাড়ি এসেছি।
এ সভায় জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, সকল ধর্মের মানুষকে এক সুতোয় গেঁথে দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর সেটি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে এ.বি.এম. মাসুদ হোসেন বি.পি.এম.বার রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বলেন, অপশক্তির বিনাশ হবে, সমাজ আলোকিত হবে, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে বলবো “ধর্ম যার-যার দেশ এবং উৎসব সবার’’।
উক্ত সার্বজনীন শারদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন, বাঘা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামান আসাদ, ডাঃ মল্লিকা সরকার ও মিঠন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা , সকল ইউপি চেয়ারম্যান, হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যান্য নেত্রীবৃন্দ, বাঘা প্রেস ক্লবের সাংবাদিক বৃন্দ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তি ও সুশীল সমাজের নেত্রীবৃন্দ-সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
সব শেষে আমন্ত্রীত অতিথিদের হাত দিয়ে সমাজের অসহায় মানুষের মাঝে কাপড় বিতরণ করা হয়। এর আগে পুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি শী-সুজিত কুমার ওরুপে বাকু পান্ডে বলেন, আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমান সরকার এবং আমাদের চারঘাট-বাঘা থেকে তিন তিনবার নির্বাচিত সাংসদ ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি এবছর পুজোয় রাষ্ট্রীয় কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করায় আমাদের মাঝে উপস্থিত হতে না পারলেও সরকারি অনুদানের পাশা-পাশি প্রতিবারের ন্যায় উপজেলার সকল পুজা মন্ডপে নিজ তহবিল থেকে ১০ হাজার করে টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছেন।