সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় খুচরা বিক্রেতাদের দোকানে তেল মজুদ : এক রাতে লাখোপতি !

নুরুজ্জামান,বাঘা : শুক্রবার রাত থেকে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে । এর ফলে শনিবার সকাল থেকে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ইতোমধ্যে অনেক রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। এদিক থেকে যে সকল ব্যবসায়ীরা তেল মজুদ রেখেছে,তাদের অনেকেই এক রাতে লাখোপতি আবার অনেকেই কোটিপতি বনে গেছেন।

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। জনবান্ধব আওয়ামীলীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যত দিন সম্ভব ছিল, তত দিন সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই তেলের দাম কিছুটা সমন্বয়ে যেতে হয়েছে । তবে আকষ্মিক ভাবে সকল প্রকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষনাকে নতুন সুযোগ হিসাবে কাজে লাগিয়েছেন উপজেলা পর্যায়ের পেট্রোলিয়াম এজেন্সী ও খুচরা তেল বিক্রেতারাগণ।

সরেজমিন সকালে বাঘা পৌর সভার অধীনস্ত বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত “মেসার্স করিম পেট্রোলিয়াম’’ খুচরা ডিজেল, পেট্রোল,অকটেন ও কেরসিন বিক্রেতা ঘরে গিয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক রিয়াজুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই মুহুর্তে তার ঘরে 9 হাজার লিটার তেল মজুদ আছে। এ দিক থেকে উপজেলার আড়ানী পৌর বাসটার্মিনালে খবর নিয়ে জানা যায়, সেখানে পাশা-পাশি তিনিটি খুচরা দোকানে প্রায় 25 হাজার লিটার তেল মজুদ আছে। অপর দিকে উপজেলা সদরে অবস্থিত “ বাঘা পেট্রোলিয়াম’’ এজেন্সীর ম্যানেজার রবিউল ইসলাম দাবি করেন, তাদের কাছে এই মুহুর্তে মাত্র চার হাজার লিটার ডিজেল এবং পেট্রোল মৌজুদ আছে।

তবে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মনিগ্রাম, তেথুলিয়া, সরের হাট, নারায়নপুর, গোকুলপুর ,মীরগঞ্জ সহ বাঘার দু’টি পৌর সভা ও উপজেলার 7 টি ইউনিয়নের বিভিন্ন মোড় ও আনাচে-কানাচে মিলে প্রায় 25-30 টি খুচরা তেলের দোকান রয়েছে। যাদের তেল বিক্রী করার কোন বৈধতা নেই।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, যদি বাজার এলাকায় কেউ পেট্রোলের ব্যবসা করতে চাই তার জন্য সরকারি অনুমোদন লাগে। বিশেষ করে ছাদ ঢালাই ঘর সহ-দোকানের চার পাশের ব্যবসায়ীদের অনুমতির দরকার হয়। এ ছাড়াও বিস্ফোরক অফিস এবং ফায়ার ডিফেন্স থেকে জ্বালানি তেল বিক্রীর একটি ছাড়পত্র নিতে হয়। যা এ অঞ্চলের খুচরা তেল বিক্রেতাদের আছে কি-না সন্দেহ। অথচ এ সকল বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠদের কোন নজরদারি নেই।

এদিকে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখন থেকে ডিজেলের দাম হবে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা, যা এত দিন ছিল ৮০ টাকা । কেরোসিনের দামও একই হারে বাড়ানো হয়েছে। নতুন দাম ডিজেলের সমান, অর্থাৎ ১১৪ টাকা। বাড়ানো হয়েছে পেট্রল ও অকটেনের দামও। পেট্রলের নতুন দাম প্রতি লিটার ১৩০ টাকা, যা এত দিন ৮৬ টাকা ছিল। অপর দিকে অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার সর্তে অনেকেই অভিযোগ করে বলেন ,এ অঞ্চলে যারা খোলা বাজারে তেল বিক্রী করে তাদের অনেকেই পেট্রোলের সাথে ক্যামিকেল মিশিয়ে ভ্যাজাল অকটেন তৈরী করে মানুষকে ঠকিয়ে থাকেন। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে এক লাফে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাতা-রাতি লাখপতি বনেছেন উপজেলা পর্যায়ের খুচরা তেল বিক্রেতাগণ ।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মজুদকৃত তেল আগের দামে বিক্রী করতে হবে। আমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি মিটিং-এ যাচ্ছি, সেখান থেকে ফিরে এসে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।


প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২২ | সময়: ৪:০২ অপরাহ্ণ | সানশাইন

আরও খবর