শিক্ষামন্ত্রী ‘লজ্জিত, দুঃখিত’

সানশাইন ডেস্ক: দক্ষিণ খানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকা অবস্থায় খেলার মাঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অতিথি হয়ে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন দীপু মনি। গত ২৫ জুলাই রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠে থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকা অবস্থায় খেলার মাঠে থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আয়োজন এবং তাতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বুধবার রাতে সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি ভীষণভাবে লজ্জিত ও দুঃখিত।”
গত ২৫ জুলাই রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় পাশাপাশি পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে মাঠে থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী। পরে বুধবার রাতে তিনি মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অনুষ্ঠানে এ নিয়ে কথা বলেন।
“আমি খুবই বিব্রত এবং একেবারেই আমার অজান্তে এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। আমি বিষয়টি জানতাম না। ওখান থেকে চলে আসার পর জানতে পেরেছি, অনুষ্ঠানটি যে মাঠে আয়োজন করা হয়েছে তার আশপাশে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে সেসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে থাকে।
“যদিও আমাকে বলা হয়েছে, সেদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে। সমাবেশের জন্য সেখানে প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে, তাই সেখানে যদি ক্লাস চলেও থাকে, তাহলে একেবারে নির্বিঘ্নে চলেছে তা বলার কারণ নেই।” দীপু মনি বলেন, “আমি ভীষণভাবে লজ্জিত ও দুঃখিত। আমি নিজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি। বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে এ ধরনের অনুষ্ঠানে আমি অংশগ্রহণ করেছি। আমি জানি না সেখানে বিকল্প জায়গা ছিল কি না।
“এ ধরনের রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক অনুষ্ঠান বিকল্প স্থানে করা হয়ে থাকে। আর যদি বিকল্প স্থান না থাকে তবে স্কুল-কলেজ ছুটির দিনে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রম যেন কোনোভাবে ব্যাহত না হয় সেটি করতে হবে।” মাঠ সংকট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ব্যবহারের নিয়মের কথাও শিক্ষামন্ত্রী বলেন।
“সারাদেশে খেলার মাঠের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। খোলা মাঠ বলতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ রয়েছে। এর বাইরে তেমন মাঠ নেই। আমরা রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় এলাকাভিত্তিক যে অনুষ্ঠান করি, সেখানে দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব আয়োজন করা হচ্ছে। বিকল্প কোনো জায়গা না থাকার কারণে স্কুল-কলেজের মাঠ বা খোলা জায়গা ব্যবহার করি।
“এ বিষয়ে আমাদের একটি নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত অনুষ্ঠান তাদের মাঠে করবে। তবে বাইরের কোনো রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক হোক বা অনেক সময় হাটবাজার বসানো হয় আবার মেলা বসানো হয়। সেগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে করতে আমরা নিরুৎসাহিত করি।”
তিনি বলেন, “অনেক স্থানে বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলেও পাঠদান ব্যাহত করে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। তবে স্কুল-কলেজ বন্ধের দিন এসব অনুষ্ঠান করা যাবে।” বিব্রত শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমি অনুরোধ জানাব, এ ধরনের অনুষ্ঠান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজন করার ক্ষেত্রে সেখানকার দায়িত্বরতদের সঙ্গে আলোচনা করে বন্ধের দিন যেন আয়োজন করা হয়।”


প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২২ | সময়: ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ