বাঘায় ঠিকাদার ও সাংবাদিকের পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ !

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় একজন ঠিকাদার ও সাংবাদিক একে-অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ ও জিডি করেছেন। উপজেলার হরিনা এলাকায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে একটি রাস্তা নির্মানের ছবি ও ভিডিও ধারণ করার কারনে ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস সরকার ওই সাংবাদিককে অশালীন ভাষায় গালা-গালি সহ প্রকাশ্যে প্রাণ নাশের হুমকি দেন। এ ঘটনায় এশিয়ান টিভির সাংবাদিক আখতার রহমান ঐ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ২৬ মে’বাঘা থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জি.ডি)করেন। এরপর উভয় পক্ষ পরবর্তিতে একে-অপরের বিরুদ্ধে পৃথক আরো দু’টি অভিযোগ দায়ের করেন।

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, সাংবাদিক আখতার রহমান বাঘা থানায় ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে জিডি করার একদিন পর ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস তার নিজের অপকর্ম ঢাকতে আখতার রহমানের বিরুদ্দে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা বাজির অভিযোগ করেন। এরপর ২৯ মে’ সকালে তার লোকজন নিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নারী-পুরুষ সমান্বয় (মানহানিকর) ঝাড়ু– মিছিল শেষে উপজেলার বঙ্গবন্ধু চত্বরে অশালীন বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

এ ঘটনায় স্থানীয় বাঘা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা ঐদিন বিকেলে তাদের নিজেস্ব কার্যালয়ে এক জরুরী সভা ডেকে আব্দুল কুদ্দুস সরকারের এহেনও কর্মকান্ডে ধিক্কার জানানো-সহ তার দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং ঐ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন।

এ সময় সাংবাদিকরা বলেন, আব্দুল কুদ্দুস সরকার বাঘা পৌর আ’লীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে নিজেকে অনেক প্রভাবশালী মনে করেন। তার সকল ঠিকাদারি কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি রয়েছে। আর এ সকল দুর্নীতির খবর প্রকাশ করতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনে মিছিল করেন । যার ব্যত্বয় ঘটেনি ২০২০ সালে। সে সময় একটি রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেওয়ায়, তার বড় ছেলে একজন উপ-সহকারি প্রকৌশলীকে মারপিট করে। এ ঘটনায় তার ছেলের নামে একটি মামলা করেন ঐ প্রকৌশলী। আর নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি স্থানীয় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিছিল করেন। এরপর ঘটনাটি অন্য দিকে মুড় নিলে তিনি দলীয় লোকজনের সহায়তায় ঐ দুই সাংবাদিকের হাত ধরে ক্ষমা চান।

এদিকে স্থানীয় সাংবাদিকদের সিদ্ধান্ত মতে, ৩১ মে’ রাতে আখতার রহমান তাঁর মানক্ষুন্য করার অভিযোগ এনে বাঘা থানায়-ঠিকাদার আব্দুল কুদ্দুস,তার ভাই মহিদুল ,দুই ছেলে সেলিম ও শামিম, ভাগ্নে সুরুজ জামান ও মিছিলে উপস্থিত চিহৃত মাদক ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন।

এসব বিষয়ে বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ২০২০ সালে আব্দুল কুদ্দুসের বড় ছেলে আমার একজন উপ-সহকারিকে অফিসে এসে মারপিট করেছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলা দিলে পরবর্তী সময় তিনি দলীয় নেতাদের সাথে করে আমার অফিসে এসে ক্ষমাচান। ঘটনার এক পর্যায় বিষয়টি আপোশ করে নেয়া হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে ক্রয় সূত্রে উপজেলার হরিনা এলাকায় একটি রাস্তার কাজ করছেন আব্দুল কুদ্দুস। সেখানে প্রথমে পুরাতন ইট সহ নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করছিলো। পরে সেটি বন্ধকরে দেয়া হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)সাজ্জাদ হোসেন বলেন, উভয় পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ-সহ একটি সাধারণ ডায়েরি(জি.ডি)পেয়েছি । বিষয় গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ | সময়: ৪:২৭ অপরাহ্ণ | সানশাইন