শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিগগিরই খুলবে

সানশাইন ডেস্ক: ওমিক্রনের চাপ পেরিয়ে দেশে সংক্রমণের হার ধীরে ধীরে কমে আসতে শুরু করায় শিগগিরই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। শুক্রবার সকালে সিলেট সার্কিট হাউস মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “খুব দ্রুতই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।”
মহামারীর কারণে দেড়বছর বন্ধ থাকার পর গতবছরের সেপ্টেম্বরে সব স্কুল-কলেজ খুলে দিয়েছিল সরকার।
কিন্তু করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটে এ বছরের শুরু থেকে সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকে দ্রুত। এই প্রেক্ষাপটে গত ২১ জানুয়ারি ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। শিক্ষামন্ত্রী সে সময় বলেছিলেন, শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
শুরুতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও সংক্রমণ পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি না হওয়ায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান আর জনসমাগমে বিধিনিষেধের মেয়াদ ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এখন আবার সংক্রমণ কমে আসায় শিক্ষার্থীদের কোভিড টিকা দিয়ে দ্রুত স্কুল খুলে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন বিভিন্ন সংগঠন ও অভিভাবকরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুদের যে ক্ষতি হচ্ছে, সে বিষয়গুলো তুলে ধরে ইউনিসেফও একই আহ্বান জানিয়েছে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দেলনের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে সকালে সিলেট পৌঁছান শিক্ষামন্ত্রী। সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানে সরকার সব ধরনের চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অধিকারের পাশাপাশি দায়িত্বও রয়েছে। সকল সমস্যাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। এরকম সমস্যা প্রায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই হয়।”
জাতীয় উদ্যোগের মাধ্যমে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। এর জেরে ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠির পাশাপাশি কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পুলিশ।
এরপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন; এক পর্যায়ে তারা আমরণ অনশনে বসেন। ২৬ জানুয়ারি সেই অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক। অনশন ভাঙলেও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের ‘আমন্ত্রণে’ সিলেটে এসেছেন জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “সেখানে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় সে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম কেমন চলছে সেগুলো দেখব। শাবির সৃষ্ট সমস্যা খুব বড় নয়, আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সমাধান করা হবে।”
শুক্রবার বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মন্ত্রীর বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। অন্যদের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জগদীশ চন্দ্র দাস ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ টি এম এ হাসান জেবুল মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২ | সময়: ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ