রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা : ঝরে যাচ্ছে আম-লিচুর গুটি

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার বেলা ৩টায় তাপমাত্রার পারদ উঠেছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৩০ শতাংশ। এ অবস্থায় গাছ থেকে ঝরে যাচ্ছে আম ও লিচুর গুটি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে- এটি চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগের দিন মঙ্গলবার ছিল ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং তার আগের দিন সোমবার (১৫ এপ্রিল) ছিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ রাজশাহীতে চলমান মাঝারি তাপপ্রবাহ এখন তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
গত ১ এপ্রিল থেকে রাজশাহী অঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হয়। এর মধ্যে ৪ এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর মৃদু তাপপ্রবাহ মাঝারি তাপপ্রবাহে রূপ নেয়। আর বুধবার তাপমাত্রা ৪০ ছাড়িয়ে তা তীব্র তাপপ্রবাহে পৌঁছাল।
এদিকে মৌসুমের সর্বোচ্চ এই তাপমাত্রায় রাজশাহীর প্রকৃতি যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। সকাল থেকেই আগুন ঝরাচ্ছে সূর্য। প্রকৃতি যেন তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ছে। গাছের সবুজ পাতাগুলো হয়ে উঠেছে বিবর্ণ। বাইরে বইছে গরম বাতাস। আদ্রতা কমে যাওয়া পথেঘাটে থাকা মানুষের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। ভবনের ট্যাপকল দিয়ে বের হচ্ছে ফুটন্ত পানি। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। টানা তাপদাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। বাড়ছে হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগবালাই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গেল দুদিন থেকে রাজশাহীতে তাপপ্রবাহ নিয়ে সতর্ক থাকতে মাইকিং শুরু করেছে সেচ্ছাসেবী সংস্থা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি। তারা এই গরমে হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচতে সতর্কতামূলক পরামর্শ দিচ্ছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজীব খান বলেন, সামান্য বিরতি দিয়ে থার্মোমিটারে তাপমাত্রার পারদ বুধবার ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। এদিন বেলা ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আর দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েক দিন রাজশাহী অঞ্চলে এই তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান। এদিকে এ অবস্থায় আম ও লিচুর গুটি ঝরে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
কৃষকরা বলছেন, চলমান রুক্ষ আবহাওয়ার কারণে রাজশাহীতে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। জেলার ৯ উপজেলাতেই একই অবস্থা। ফলে চলতি মৌসুমে আম ও লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন আমবাগান মালিক ও চাষিরা। লোকসান ঠেকাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তারা। গাছের পরিচর্যা করছেন, স্প্রে করছেন ছত্রাকনাশক। গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছেন।


প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ | সময়: ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ