জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় ১১ জনের ফাঁসির রায়ের জের বিচারককে হত্যার হুমকি, মামলা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র মোয়াজ্জেম হত্যা মামলায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জের ধরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীনের ভাড়ার বাসার গ্রীল কেটে চুরি ও তাকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জয়পুরহাট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন।
ঘটনার খবর জানতে পেয়ে ইতোমধ্যে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জয়পুরহাট থানা সূত্রে পাওয়া মামলার বিবরণে জানা গেছে, জয়পুরহাট শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাউজিং এস্টেট এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন জয়পুরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে তার বাড়ির জানালার গ্রীল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে অজ্ঞাত ৩ ব্যক্তি। এরপর তারা বিচারকের ঘরের লক খোলার চেষ্টা করলে তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রতিবেশী পুলিশ কনস্টেবল আরিফুলকে ফোন দেন ও চিৎকার করেন বিচারক দম্পতি।
এরই মধ্যে দুস্কৃতিকারীরা তার শয়ন কক্ষে ঢুকে বিচারক আব্বাস উদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী বেদারুল ইসলাম বেদিন সহ ১১ জনের গত ৩১ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়ায় ছোরা দেখিয়ে বিচারককেও ফাঁসি দিবেন বলে হুমকি দেন। এসময় পুলিশ কনস্টেবল আরিফুল এসে চিৎকার দিলে দুসকৃতিকারীরা পালিয়ে যায়।
দুস্কৃতিকারীরা যাওয়ার সময় একটি ব্রিফকেসে রাখা ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়া সেসময় কনেস্টবল আরিফুল একজনকে জাপটিয়ে ধরলে সে ছুটে পালয়। এ সময় আরিফুল রাস্তার উপর পড়ে গিয়ে হাটুর নিচে গুরুতর আহত হন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি রায়ের জেরে পলাতক আসামী নিজেরা অথবা তাদের লোকজন দিয়ে বিচারককে হত্যার করার উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ওই আদালতের সেরেস্তা সহকারী আফরোজা সুলতানা মিলির মাধ্যমে থানায় মামলার লিখিত কপি পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলমসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে জানালার গ্রীলের কাটা অংশ মেরামত করা দেখা যায়।
জয়পুরহাট জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, সোমবার রাতে বিচারক আব্বাস উদ্দীনের বাড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, খবরটি মঙ্গলবার বিকেলে জানতে পেয়েছি। ঘটনায় বিচারক থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তা নিবিড়ভাবে তদন্ত করছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জয়পুরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ন কবির বলেন, এ ঘটনাযর খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তীতে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যাপারটা রহস্যজনক ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। রহস্য উদঘাটন করার জন্য আমরা সার্বিক ভাবে চেষ্টা করছি।
এ ঘটনায় ওই বিচারকের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪ | সময়: ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ