৮ মাস আগে মৃত নারী জীবিত হয়ে বাড়ি ফেরায় তোলপাড় এলাকায়

শিবগঞ্জ প্রতিনিধি  :
প্রায় আট মাস আগে হত্যাকাণ্ডে শিকার হয়েছেন ববিতা নামে এক নারী। তাঁর লাশও বস্তাবন্দি উদ্ধার করে পুলিশ। এমন এক সংবাদ দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে সে সময়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে একজনকেও সে ঘটনার পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি উচ্চ আদালতে জামিনে রয়েছে বর্তমানে। বিগত আট মাস আগে হত্যাকাণ্ডে শিকার হওয়া ওই নারী জীবিত হয়ে পিতার বাসায় ফিরলেন স্বামীকে সাথে নিয়ে। আট মাস পূর্বে মৃত নারী জীবিত হয়ে স্বামীসহ পিতার বাড়ি বাড়ি ফেরায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা-উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে, লোকের মুখে মুখে একই কথা ঘটনাটি বড়ই রহস্যজনক। এমন ঘটনায় ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল গ্রামে। হত্যাকাণ্ডে শিকার হওয়া ওই নারী শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল গ্রামে মো. রসুল আলীর মেয়ে ববিতা।

 

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার মামলা (নং ৫২, তারিখ ২৬জুলাই ২০২৩) সুত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জুলাই ২০২৩ খ্রি. তারিখে বিকাল সোয়া ৪টার সময় ৯৯৯ নং ফোন কল সুত্রে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নে পলশা গ্রামের লীলাখেলা মোড়ে বস্তা বন্দী একটি লাশ পড়ে থাকার সংবাদ পেয়ে এস.আই বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে সংগীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের পর পাঠানো হয়। মামলার এজাহারে উল্লেখ্য আছে কে বা কারা গত ১৬-০৭-২০২৩ হতে ২৬-০৭-২০২৩খ্রি. তারিখের মধ্যে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে এখানে ফেলে দিয়েছিল।

এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার এস.আই আফজাল হোসেন গত ৯ আগস্ট ২০২৩খ্রি. তারিখে শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর বিনোদপুর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ ক্যাপড়াটোলা গ্রামের এনামুল হকের ছেলে রুবেল হক(২৮) কে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন। বর্তমানে রুবেল জামিনে মুক্ত আছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন আছে।

 

কিš‘চলতি বছরের গত ১৭ জানুয়ারি ববিতা তার স্বামী মাজেদ আলীকে সাথে নিয়ে মনাকষায় তার পিতার বাড়িতে উপস্থিত হলে এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায় এবং শত শত নারী পুরুষ তাদেরকে দেখতে ভীড় করে।

এসময় ববিতা বলেন, প্রায় আট মাস আগে রুবেল আমাকে ফোন করে ডাকলে আমি তার কথা মত হাউস নগর গ্রামের মাথায় উপস্থিত হয়। এসময় তার সাথে আরো দুইজন আমাকে নওগাঁয় নিয়ে যায় এবং ৩জনই আমাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করার পর ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আমাকে ফেলিয়ে পালিয়ে যায়। আমি এর বিচার চাই।

 

অন্যদিকে, তার স্বামী ও নওগাঁ জেলার মান্দা থানার পরইল কাঞ্চন গ্রামের মৃত আফসার আলীর ছেলে মাজেদ আলী জানান, এক বছর আগে আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় প্রায় সাড়ে চার মাস আগে মান্দা এলাকায় একটি অটো গ্যারেজে পাওয়া ববিতাকে বিয়ে করি। বিয়ের সময় তার নাম পিয়া খাতুন, বাাড়ি কুঁড়িগ্রাম বলে পরিচয় দেয়। বিয়ের পর তাকে ঢাকা গিয়ে আমি একটি গার্মেন্টেসে চাকুরী করি। এর মাঝে তার অসুখ হলে চিকিৎসা করায় এবং তার পিতার বাড়ি নিয়ে যাওবার জন্য ঠিকানা চাইলে সে কোন ঠিকানা দিতে পারেনি। তবে সে হুমায়ুন রেজা উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছে বলে জানালে গুগলে সার্চ দিয়ে তার ঠিকানা বের করে মনাকষার তার পিতার বাড়ি আসি।

 

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানান, ববিতা আগে থেকে কিছুটা মস্তিস্ক বিকৃতি ছিল। তবে রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া তো একটি ষড়যন্ত্র । উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই ২০২৩ খ্রি. তারিখে ববিতার পিতা রসুল আলী শিবগঞ্জ থানায় রুবেলেল কালিগঞ্জ ক্যাপড়াটোলা গ্রামের এনামুল হকের ছেলে রুবেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছিল।

শিবগঞ্জ থানায় সেকেন্ড অফিসার খাইরুল ইসলাম জানান, ববিতা ও তার পিতাকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করে তাদের বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তার বর্তমান স্বামীর ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না। তবে শুনেছি সে বিয়ে করেছে এবং প্রায় আট মাস আগে বালিয়াডাঙ্গাতে উদ্ধারকৃত লাশ ববিতার বলে তার পিতা দাবী করেছিল।

শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন জানান, মেয়েকে তার পিতার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের পালশা গ্রাম থেকে উদ্ধার কৃত বস্তাবন্দী লাশের ব্যাপারে তাকে সন্দেহজনক ভাবে আটক করা হয়েছিল। এখন আবার সে মামলার তদন্ত হবে।

সানশাইন / শামি

 

 


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৪ | সময়: ৭:০৯ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine