কোহলিদের প্রধান কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার

স্পোর্টস ডেস্ক: বছরের পর বছর বড় বাজেটে তারকা সমৃদ্ধ দল গড়লেও কখনও আইপিএল ট্রফির ছোঁয়া পায়নি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর। অধরা সেই সাফল্যের স্বাদ পেতে এবার তাদের ভরসা অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। জিম্বাবুয়ের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও বিশ্ব ক্রিকেটের দারুণ সফল এই কোচকে প্রধান কোচের দায়িত্ব দিল দলটি।
সামাজিক মাধ্যমে শুক্রবার ফ্লাওয়ারকে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দেয় বেঙ্গালোর। চুক্তির মেয়াদ অবশ্য সুনির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। বেঙ্গালোরে ফ্লাওয়ার শিরোপা জয়ের ছক সাজাবেন অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি, দলের প্রতীক হয়ে ওঠা বিরাট কোহলির মতো তারকাদের সঙ্গে। দু প্লেসির সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন ক্যারিবিয়িান প্রিমিয়ার লিগে সেন্ট লুসিয়া কিংসেও।
গত মৌসুমে দলের ব্যর্থতার পর ডিরেক্টর অব কোচিং মাইক হেসন ও প্রধান কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের সঙ্গে চুক্তি আর নবায়ন করেনি বেঙ্গালোর। গতবার চার মৌসুমের মধ্যে প্রথমবার প্লে অফে উঠতে ব্যর্থ হয় দলটি। দল গঠন ও পরিচালনার ব্যয়, তারকার ভার, জনপ্রিয়তা, সব দিক থেকে বরাবরই আইপিএলের শীর্ষ ফ্রাঞ্চাইজির একটি বেঙ্গালোর। কিন্তু একবারও তারা শিরোপা জিততে পারেনি। ১৬ আসরে তাদের সেরা সাফল্য তিন বার রানার্স আপ হওয়া। সেটিও তারা সবশেষ পেরেছে সেই ২০১৬ সালে।
খরা ঘোচানোর আশায় এবার পরীক্ষিত একজনকে কোচের দায়িত্বে আনল দলটি। জিম্বাবুয়ের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান বলে বিবেচিত ফ্লাওয়ার কোচ হিসেবে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের আলাদা জায়গা করে নেন ইংল্যান্ডের দায়িত্বে। ২০০৭ সালে সহকারী কোচ হিসেবে শুরুর পর ২০০৯ সালে প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন তিনি। ওই বছরই অ্যাশেজ জিতে নেয় ইংল্যান্ড। পরে তারা ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অ্যাশেজ জিতে ফিরতে পারে। ২০১৩ সালেও ইংলিশরা ধরে রাখে অ্যাশেজ।
তার কোচিংয়েই প্রথম আইসিসি শিরোপার স্বাদ পায় ইংল্যান্ড ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হয় তারা রানার্স আপ। তার সময়ে আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও পা রাখে ইংল্যান্ড। ২০১৩-১৪ অ্যাশেজে ব্যর্থতার পর প্রধান কোচের দায়িত্ব ছাড়লেও ইংল্যান্ড তাকে ছাড়েনি। ‘টেকনিক্যাল ডিরেক্টর অব এলিট ক্রিকেট’ পদ নিয়ে ইংল্যান্ডের বোর্ডেই কাজ করে যান তিনি। ইংলিশ ক্রিকেটে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করে অবশেষে ছেড়ে দেন ২০১৯ সালে।
কোচ হিসেবে জিম্বাবুয়ের সাবেক এই অধিনায়কের সাফল্যের পতাকা উড়তে থাকে এরপর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুনিয়ায়। তার হাত ধরে পিএসএল চ্যাম্পিয়ন হয় মুলতান সুলতান, আইএল টি-টোয়েন্টির শিরোপা জেতে গালফ জায়ান্টস, দা হান্ড্রেড-এর ট্রফি জিতে নেয় ট্রেন্ট রকেটস। তার কোচিংয়ে দুই দফায় সিপিএল ফাইনালে খেলে সেন্ট লুসিয়া কিংস।
সবশেষ এবারের অ্যাশেজে তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়া দলের পরামর্শক। সিরিজ জিততে না পারলেও ইংল্যান্ডে গত সফরের মতো এবারও অ্যাশেজ ধরে রাখে অস্ট্রেলিয়া। আইপিএলে আগে পাঞ্জাব কিংসের দায়িত্বে থাকলেও সাফল্য পাননি ফ্লাওয়ার। সবশেষ দুই আসরে তিনি ছিলেন লক্ষ্নৌ সুপার জায়ান্টসের প্রধান কোচ। আইপিএলের নতুন এই ফ্র্যাঞ্চাইজি তাদের প্রথম দুই মৌসুমেই টানা প্লে অফ পর্বে পা রাখে।
ফ্লাওয়ারকে কোচিং স্টাফে পেতে রাজস্থান রয়্যালসের তুমুল আগ্রহের খবরও প্রকাশিত হয়েছিল ভারতের সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু তাকে পাওয়ার লড়াইয়ে জিতে গেল বেঙ্গালোর। ৫৫ বছর বয়সী কোচের চ্যালেঞ্জ এবার বেঙ্গালোরকে শিরোপা জেতানো।


প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৩ | সময়: ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ