আলাদিনের চেরাগ,চারঘাট-বাঘার শাহরিয়ার

ফিচার :

 

মেধাবী,দক্ষ,ত্যাগী,যোগ্য,সৎ সেই সাথে পরিশ্রমী একজন আদর্শবান নেতার সঠিক নেতৃত্বই দেশ ও জাতিকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাতে সাহায্য করে। ভিআইপি কিংবা সিআইপি আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম একজন মানবিক গুণাবলীর মানুষ , সততা পরিশ্রম এবং ত্যাগের মাধ্যমে ধীরে ধীরে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। শিল্প-প্রতিষ্ঠানের উপার্জিত অর্থ-বিত্ত তিনি নিজের প্রয়োজনে ভোগ না করে দরিদ্র নিরীহ জনগণের মাঝে নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দিয়ে মানসিক তৃপ্তি পান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই প্রকৃতির মানুষ খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায় না।

 

শাহরিয়ার আলম গত ২০০৮ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এমপি হয়েছেন ভাল গুনের কারণে। এমপি হয়ে তাঁর ধ্যান, জ্ঞান এবং পরিকল্পনা এলাকার রাস্তাঘাট নির্মাণ এবং মেরামত, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ দরিদ্র অসহায় জনগণের সঠিক উন্নয়ন করা। তাঁদের নিজস্ব ব্যবসায়ী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থাকায় সরকারি সম্পদ বা অর্থ গ্রহন করেননি। বরং সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি নিজের উপার্জিত অর্থও জনগণের সেবায় নিয়োজিত করেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী -৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: শাহরিয়ার আলম।

 

 

কথাই আছে “জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভাল”। যে কোন মানব সন্তান কর্ম দ্বারা ব্যাপকভাবে সুনামের অধিকারী হতে পারে আবার কর্ম দ্বারা ব্যাপকভাবে বদনামের অধিকারীও হতে পারে। কিছু গুণ বা ভাল কাজ মানুষকে আজীবন স্মরণীয় করে রাখে। আর তা বহমান থাকে মৃত্যুর পরেও অনাধিকাল পর্যন্ত। যুগ যুগ ধরে বাঘা-চারঘাটের মানুষ আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম কে স্মরণে রাখে ভাল কাজের জন্য। আর তার অবর্তমানে আক্ষেপ করবে তাকে হারানোর জন্য। পাশাপাশি খুঁজে বেড়ায় মানব সেবক ঐ লোকটির মতো আর একজন গুণী মানুষকে। দুনিয়ার সবচাইতে সত্য কথা হচ্ছে মানব সেবা ছাড়া এই দুনিয়ার কোন মানুষ কোন কালেও মানুষের মনের ভালবাসা পায় নাই। এমনকি মানবসেবা না করলে আল্লাহর ভালবাসা পাবার কথাও চিন্তা করতে পারে না। এই সকল মানব সেবক আল্লাহর অশেষ রহমতে হঠাৎ করে দীর্ঘকাল পরপর একেক অঞ্চলে ভাগ্যগুণে আর্বিভুত হয়। এই সকল সমাজসেবক, জনদরদী মানুষগুলো এলাকার অসহায় হতদরিদ্র মানুষের আর্শিবাদ স্বরূপ আরোহন করে থাকে। ঠিক তেমনি একজন মানুষ হলেন আলহাজ্ব মো: শাহরিয়ার আলম।

 

আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম চারঘাট-বাঘা উপজেলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের রূপকল্প পরিকল্পনা নিয়ে ২০০৭ সালে অসহায় গরীব দুঃখী মানুষকে সাহায্য ও সহযোগিতা করার মাধ্যমে এ অঞ্চলে পদার্পন করেন। স্বল্প সময়ে নিজ কর্মের গুণে মানুষের খুবই আপন ও জনপ্রিয় মানুষ হয়ে উঠেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে রাজশাহী -৬ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়ে পাল্টে ফেলেন দীর্ঘদিনের অবহেলিত চারঘাট-বাঘা উপজেলার জরাজীর্ণতা। বর্তমানে তিনি এ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। দায়িত্ব পালন করেছেন দুই মেয়াদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে চতুর্থবারের মতো নির্বাচন করছেন।

 

 

দেশ স্বাধীনের পরে শাহরিয়ার আলম সংসদ সদস্য হওয়ার পূর্বে এই আসনে আরও সাতজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি হলেন অষ্টম সংসদ সদস্য। এর মধ্যে দুইজন দুইবার এবং বাকী সবাই একবারের সংসদ সদস্য। আবার একজন ছিলেন সরকারের প্রতিমন্ত্রীও। কিš‘ অতীতের কেউ যা পারেনি তা করে দেখিয়েছেন তিনি।

 

দীর্ঘ ১৫ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে এলাকার উন্নয়নে সরকারী, বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তিগত অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে চারঘাট-বাঘা উপজেলাকে একটা আধুনিক ডিজিটাল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালান। ই”েছ থাকলে উপায় হয় এবং চেষ্টা করলে সফল হয়। এ কথাগুলোর সত্যতার প্রমাণ দিয়ে সফলও হয়েছেন শাহরিয়ার আলম এমপি। চারঘাট-বাঘাবাসীর বিভিন্ন প্রয়োজনে বিশেষ করে চিকিৎসা, বাসস্থান নির্মাণ, গরীবের বিয়ে, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ ইত্যাদিতে সাহায্য করা বাবদ প্রতিমাসে নিজস্ব অর্থায়নে ব্যক্তিগতভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করেন তিনি । দুই উপজেলার এমন কোন গ্রাম নেই যে গ্রামে তার ব্যক্তিগত অনুদান পৌঁছে নাই। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, হার্টের রিং পড়ানো, বিবাহযোগ্য অসহায় বাবা-মায়ের কন্যার বিয়ের খরচ হতে আরম্ভ করে গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরীর টাকা প্রদান করা,অস”ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও অনেক জনপ্রতিনিধিকেও আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে হার্টের রিং পড়ানোর টাকা প্রদান, মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার ব্যয় বহন করার অনেক উদাহরণ রয়েছে। এইরকম বরাদ্দ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সরকারী বরাদ্দের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ মসজিদ মন্দির, বাজার বিদ্যুতায়নসহ নানাবিধ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এই জনপদে তারই মাধ্যমে।

 

গত ১৫ বছরে চারঘাট-বাঘায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মো শাহরিয়ার আলম এর দাড়া সাধিত হওয়া নানাবিধ উন্নয়নের একাংশ- বানেশ্বর হতে ঈশ্বরদী পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক ২ লেন থেকে ৪ লেনে উন্নতিকরণ তথা ১৮ ফিট থেকে ৩৪ ফিটে প্রশস্তকরণ, চারঘাট পৌরসভাকে ২য় শ্রেণী থেকে ১ম শ্রেণী উন্নতীকরণ, বহুল প্রত্যাশিত সরদহ কলেজ ও বাঘা ডিগ্রী কলেজ সরকারিকরণ, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় দুটি পৃথক মডেল মসজিদ নির্মাণ, চারঘাট-বাঘা মহাসড়কের পাশ দিয়ে ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ, পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ ভাঙন হতে রক্ষার জন্য বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ ও গোকুলপুর এবং চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ও রাওথা এলাকার নদীর তীর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, বাঘা উপজেলার আলাইপুর থেকে চকরাজাপুর পর্যন্ত ১২.১ কি.মি পদ্মা নদীর ড্রেজিং কাজ, বাঘা উপজেলার আলাইপুর এলাকার ১ কি.মি বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ, বাঁধ এলাকায় দর্শনার্থীদের জন্য একাধিক বসার স্থান নির্মাণের মাধ্যমে নান্দনিক স্পট বা কেন্দ্র তৈরী, চারঘাট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা, দুই উপজেলায় দুইটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন প্রতিষ্ঠা, চারঘাট-বাঘা উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুৎত্তায়নে উন্নতিকরণ, ২০০৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার বেতন তিনি মেধাবী ও দারিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করে দেন, প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, চারঘাট উপজেলার প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় আধুনিক ও সু-উ”চ একাডেমি ভবন নির্মাণ, নর্থ বেঙ্গল এক্সো ফার্ম লিমিটেডের মাধ্যমে চারঘাট-বাঘার আম, হলুদ, পেয়ারা, বরই বিদেশে রপ্তানীর ব্যবস্থা করা, নিজেস্ব অর্থায়নে বাঘায় মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ, প্রাইমারী স্কুলের দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ, চারঘাট ও বাঘা উপজেলাকে মডেল উপজেলায় রূপান্তর, বাঘা উপজেলায় দুর্গম এলাকা পদ্মার চরাঞ্চলে পাকা রাস্তা স্থাপন ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, মসজিদ মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, বড়াল নদীর উপর সেতু নির্মাণ, ১৩ই এপ্রিল ঘটে যাওয়া গণহত্যার স্মৃতি স্বরুপ চারঘাট পল্লিবিদ্যুৎ মোড়ে ১৭৪ জন শহীদের নাম সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভ তৈরী, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত দরিদ্র ও অস”ছল ব্যক্তিদের যেমন : কিডনি, ক্যান্সার, লিভার ইত্যাদি সমস্যায় ভোগা রুগিদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া সহ চারঘাট- বাঘা উপজেলার সকল ইউনিয়নের প্রতিটা ওয়ার্ডের প্রায় সকল কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ। নানাবিধ উন্নয়নের এক মাইলফলক স্থাপন করেছেন শাহরিয়ার আলম এমপি। তিনি যেন চারঘাট-বাঘা বাসীর জন্য আশার আলোরূপে আবির্ভূত হওয়া আলাদিনের চেরাগ।

লেখক : সাংবাদিক এস.এম.দিলদার

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩ | সময়: ৪:৫৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine