শীতকালীন ফুলকপিতে স্বপ্ন বুনছেন সাইদুর

স্টাফ রিপোর্টার: আগের যে কোন মৌসুমকে পিছনে ফেলে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুন জমিতে শীতকালীন সবজি ফুলকপির আবার হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৯৬১ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমিতে।
শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপি চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন পবা উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের কৃষক সাইদুর কাজী। এছাড়াও শীতকালীন সবজি লাউ, বরবটি ও মূলা চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন।
এ বছর শীত মৌসুমে ফুলকপির চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক সাইদুর কাজী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হাইব্রিড ফুলকপি বীজ হোয়াইট মার্বেল জাতের ফুলকপি চাষে তিনি কোন ক্ষতিকর কীটনাশক বা রাসায়নিক সার ব্যবহার করেনি। জৈববালাই নাশক ও কেঁচো সার ব্যবহার করে ফুলকপি চাষ করেছেন। আবাদ ভাল হয়েছে।
কম সময়ে, অল্প পরিশ্রমে ও স্বল্প খরচে অধিক মুনাফার আশা নিয়ে এ কপি চাষ করে তিনি এখন সফলতার স্বপ্ন দেখছেন। এ জাতের ফুলকপি বাজারে কদর বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান বাজারে চাহিদা অনেকটা ভালো এবং দামও অনেক বেশি পাচ্ছেন। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। সাইদুর কাজীর ফুলকপি চাষে সফলতা দেখে স্থানীয় অনেক কৃষকরাই আগামীতে ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তারা জানান ধান, গম, ভুট্টা ও আলুর চেয়ে ফুলকপি চাষে সময়, খরচ ও শ্রম কম লাগে। তাই অন্যান্য ফসলের বদলে ফুলকপি চাষ করবেন বলে জানান কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার নওহাটা পৌরসভার টিকরীপাড়া গ্রামের মাঠে দেখা গেছে, সফল চাষি সাইদুর কাজী ৫ বিঘা জমি যেন বর্তমানে ফুলকপির রাজ্যে পরিণত হয়েছে। একেকটি ফুলকপির ওজন ১ থেকে ২ কেজি। নিজের ফুলকপি ক্ষেতে মনোযোগ দিয়ে স্বপ্নের ফসল তুলতে দেখা গেছে তাকে।
এসময় সাইদুর কাজী জানান, এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে হাইব্রিড ফুলকপির বীজ হোয়াইট মার্বেল জাতের ফুলকপির চারা রোপণ করেন। এই ফুলকপি চাষে তিনি কোন ক্ষতিকর কীটনাশক বা রাসায়নিক সার না দিয়ে জৈববালাই নাশক এবং কেঁচো সার ব্যবহার করে ফুলকপি চাষ করেছেন। রোপোনের ৭০ থেকে ৭৫ দিনের মধ্যেই এ ফুলকপি বাজারে বিক্রি করার উপযুক্ত হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় বিক্রি করতেও ঝামেলা হচ্ছে না। তার পাঁচ বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ হাজার পিচ কপি রয়েছে। পাইকারি দরে এই পর্যন্ত ১ লাখ ৫ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন। আরো ২৫ হাজার পিস ফুলকপি বিক্রি করা যাবে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এগুলো সব বিক্রি হয়ে যাবে। তার এ ফুলকপির উৎপাদন খরচ পড়েছে বিঘা প্রতি প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন সকল খরচ বাদ দিয়ে তার মুনাফা হবে প্রায় ২ লাখ টাকা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি শীতকালীন সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবার শীতকালীন সবজি ফুলকপি ৯৬১ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এবং উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই অঞ্চলের মানুষ আধুনিক সবজি চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। চাষিরা শীতকালীন ফুলকপি চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছেন। তারা ফুলকপি চাষ করে দাম ও ফলন দুটোই ভালো পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।


প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৩ | সময়: ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ