লোকসংগীত নিয়েই স্বপ্ন দেখেন তাঁরা!

সানশাইন  ডেস্ক :
বর্তমানে ক্যাম্পাসগুলোতে জনপ্রিয় গানের তালিকায় স্থান পেয়ে আছে লোকসংগীত। সেই লোকসংগীতকে টিকিয়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীরা। কেউবা দলবদ্ধ ভাবে নিয়মিত করে যাচ্ছে গান। আবার কেউবা তৈরি করেছেন নিজস্ব কোনো ব্যান্ড। তেমনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী রিপন তৈরি করেছেন তার নিজস্ব ব্যান্ড ‘সপ্তক’।

 

 

গানকে সাথে নিয়েই তার ছোট থেকে বড় হওয়া। ২০১৪ সাল থেকে আছেন রাজশাহীতে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যান্ডের কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এক পর্যায়ে মনে হলো তারও একটা নিজস্ব ব্যান্ড থাকা উচিৎ। কিন্তু একা তো কোনো ব্যান্ড গড়ে তোলা যায় না। খুঁজতে থাকেন প্রফেশনাল মিউজিশিয়ানদের। এরপর একে একে
বিভিন্ন সময়ে প্রফেশনালি কাজ করা মিউজিশিয়ানদের সমন্বয়ে ২০১৮ সালে (তারিখ) প্রতিষ্ঠা করেন ‘সপ্তক’।

 

 

ছয় বছর ধরে দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে সুনাম অর্জন করেছেন তাঁরা। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামে গান করেন তাঁরা। সমসাময়ীক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের হীরক জয়ন্তীতে গানের তালে মাতিয়েছেন দর্শকদের। এর আগে বিভিন্ন এ্যালামনাই এর প্রোগ্রাম করে আসছেন তাঁর। শুধু ক্যাম্পাসেই নয় তাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন বিভাগ, জেলা উপজেলাতে। রাজশাহীর শিল্পকলা একাডেমিতে প্রায়সই গান করেন তারা।

 

 

বর্তমানে ‘সপ্তক’ এর সদস্য হিসেবে আছেন ছয়জন। তাদের মধ্যে তিনজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী। বাকিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের। এর মধ্যে প্রধান কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আছেন প্রতিষ্ঠাতা রিপন, কিবোর্ড বাজান রৌসন রুমি। বাঁশি বাজান যিনি তার নামও রিপন। ড্রামস প্লে করেন জনি ইসলাম। বেজগিটার বাজান তৃষা। পারকিউশন করেন সিজার।

 

 

‘সপ্তক’ নিয়ে কথা হয় প্রতিষ্ঠাতা রিপনের সাথে। জানালেন কিভাবে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘সপ্তক’। তিনি বলেন, সপ্তকের শুরু ১৮ সালের দিকে। ১৪-১৮ আমি প্রফেশনালি বিভিন্ন ব্যান্ডের সাথে বিভিন্ন জায়গায় পারফরম্যান্স করতাম। তারপর একটা সময় মনে হলো নিজেরই একটা ব্যান্ড থাকা উচিত। সেই জায়গা থেকে মুটামুটি সপ্তকের পথ চলাটা শুরু।

 

 

কোনধরনের গান বেশি করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করি সব ধরনের গানই করার। লোকসংগীত, ব্যান্ড এই দুইটা বেশি করা হয়। এছাড়াও আধুনিক গান করি আমরা। যেহেতু আমি মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা করি, শুধু আমি না আমার ব্যান্ডের তিনজন মেম্বার মিউজিকের শিক্ষার্থী। মিউজক নিয়ে পড়াশোনার কারনে সব ধরনের গান করতে হয়। ক্লাসিক্যাল, সেমি ক্লাসিক্যাল, লোকসংগীত। সেই জায়গায় থেকে আমরা সব ধরনের গান করার চেষ্টা করি।

নিজস্ব কোন গান বের করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সপ্তকের নিজস্ব কোনো গান এখনো বের করা হয়নি। তবে আমার নিজস্ব লেখা একটা লোকসংগীত প্রকাশ করা আছে। আমরা যখন ব্যান্ড হিসেবে পারফরম করি তখন সেটা আমাদের গান বলেই করি। সামনে দূর্গা পূজো উপলক্ষ্যে আমার নতুন আরও একটা গানের কাজ চলছে। পূজোর আগের দিন সেই গানটা রিলিজ করা হবে। গান প্রকাশের ক্ষেত্রে আমার ব্যান্ডের সদস্যরা আমাকে করে থাকে।

 

 

গানের চর্চা করা হয় কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে আমাদের স্টেডিয়াম মার্কেটে একটা রুম আছে। সেখানেই আমরা চর্চা করে থাকি। এছাড়াও সপ্তক একাডেমি নামে একটা একাডেমি আছে। অনেক শিক্ষার্থীদের সেখানে গান শেখানো হয়।

 

 

সপ্তক নিয়ে ভবিষ্যতে কি চিন্তা ভাবনা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ব্যান্ডটাকে একটা ভালো মানের ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করা। সব ধরনের গান করি তবে লোকসংগীতের উপর বেশি প্রাধান্য দেওয়ার ইচ্ছে আছে। সব মিলিয়ে ইচ্ছে আছে সব ধরনেরই গান করার।

 

 

লোকসংগীতের ভক্ত নূর আহসান মৃদুল। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন , লোকসংগীত আমাকে গ্রাম বাংলার কথা, আমাকে আরো শুদ্ধ করা আরো একটু বাঙালি হওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সপ্তক গানের দলটি এই চর্চাই করে সবচেয়ে বেশি। তাই আমার প্রিয় গানের দলের নাম বললে সপ্তক প্রথম দিকে থাকবে।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৩ | সময়: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর