ছিনতাইকারীদের হামলা : ১৭ দিন অচেতনের পর মারা গেল নিশাদ

স্টাফ রিপোর্টার : ছিনতাইকারীর হামলায় অচেতন হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হেরে গেলেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী নিশাদ আকরাম (২৪)। রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। ছিনতাইকারীর হামলায় রিকশা থেকে পড়ে নিশাদের মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে তিনি অচেতন অবস্থায় রামেকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ছিলেন।
নিশাদ আকরাম নওগাঁর নিয়ামতপুরের কৃষক পরিবারের সন্তান। তিনি রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। রামেক হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল নিশাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ভর্তির পর থেকেই লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে। মঙ্গলবার ভোরে তিনি মারা গেছেন।
জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিশাদ তাঁর এক অসুস্থ বান্ধবীকে হাসপাতালে রেখে রিকশায় করে ফিরছিলেণ। এসময় তার সঙ্গে অপর এক বান্ধবিও ছিলো। তারা নগরীর রাজারহাতা এলাকায় আসলে ছিনতাইকারীরা নিশাদকে আঘাত করে। এতে তিনি রিকশা থেকে পড়ে যান। রিকশাওয়ালা ভয়ে রিকশা নিয়ে দূরে গিয়ে চিৎকার করলে লোকজন এগিয়ে এসে দেখেন নিশাদ অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। তাঁর মানি ব্যাগ, মোবাইল ফোন আর হাতঘড়ি নেই। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হামলার ঘটনায় তার চাচাতো ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ঘটনার দিনই মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ মো. সেলিম (৫০) নামের একজনকে গ্রেফতার করে। তাঁর বাড়ি নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায়। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেলিম এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সেলিমের নামে আগে আরও আটটি মামলা রয়েছে। সে পেশাদার ছিনতাইকারী।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নিশাদের লাশ রামেকের মর্গে নেওয়া হয়। রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মোহা. আব্দুল খালেক সেখানেই ছিলেন। তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে প্রায় ১ লাখ শিক্ষার্থীর বসবাস। নানা প্রয়োজনে তাঁরা যেকোনো সময় রাস্তায় বের হন। এ সময় প্রায়ই তাঁরা ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। ইদানীং ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। এটি কাম্য নয়। ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে একজন শিক্ষার্থী মারা যাবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ‘হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় যে মামলাটি হয়েছিল, সেটিই এখন হত্যা মামলায় রূপ নেবে। গ্রেফতার সেলিম জানিয়েছে, তাঁরা দুজন মিলে এই হামলা করেছিলো। ঘটনার সময় নিশাদের সঙ্গে তাঁর যে বান্ধবী ছিলেন, তিনি জেলখানায় গিয়ে আসামিকে শনাক্ত করেন। হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যজনকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৩ | সময়: ৬:১২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ