ছাত্র কল্যাণ পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে এমপি বাদশা

স্টাফ রিপোর্টার:
নিজ দেশের সামগ্রিক কাঠামো সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে ও মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য এবং আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে উঠতে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে বাহাত্তরের সংবিধান পাঠ বাধ্যতামূলক করা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। গতকাল মঙ্গলবার (০৩ অক্টোবর) সকালে শহরের টিচার্স ট্রেনিং কলেজে আয়োজিত ছাত্র কল্যাণ পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

 

 

 

 

এর আগে টি.টি. কলেজের ছাত্র কল্যাণ পরিষদের নির্বাচনে বিজয়ী নতুন সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যরা শপথ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নেন। পরে রাজনীতির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বর্ষিয়ান রাজনীতিক ফজলে হোসেন বাদশাকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমরা নতুন প্রজন্মের উপর নির্ভরশীল। কারণ আগামীতে তারাই দেশকে নেতৃত্ব দেবে। সুতরাং তারা যদি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে উঠতে না পারে বা পথভ্রষ্ট হয়, তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশ তার কাঙ্খিত লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হতে পারে। অতএব আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে পারে এর জন্য তাদের মধ্যে বাহাত্তরের সংবিধান চর্চার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। কারণ, বাহাত্তরের সংবিধানে বঙ্গবন্ধু যা দিয়ে গেছেন, সেটি যদি একজন শিক্ষার্থী সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে, তাহলে আমার বিশ্বাস- তার মধ্যে অবশ্যই দেশপ্রেম প্রতিফলিত হবে।

 

 

 

 

 

 

শিক্ষার্থীদের মাঝে গণতন্ত্রের সঠিক চর্চার জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত উল্লেখ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাবেক এই ভিপি বলেন, এখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আর নির্বাচন হতে দেখি না। নতুন প্রজন্মের কাছে গণতন্ত্র চর্চার জন্য এটি কতোখানি ইতিবাচক দিক তা হয়তো আমরা উপলব্ধি করতে পারি না। আমিও রাকসুর ভিপি ছিলাম। আমাদের সময়ে নিয়মিত নির্বাচন হতো। কিন্তু এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘পরিস্থিতি সামাল’ দেয়ার ভয়ে নির্বাচনের আয়োজন করতে চান না। এটি সঠিক নয়। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নির্বাচন হওয়া উচিত। শহরের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, রাজশাহীকে আমরা শিক্ষানগরী বলে থাকি। কিন্তু বাস্তবে শিক্ষানগরীর রূপ অতীতে কেউ দিতে পারেনি। আজকে চারিদিকে তাকিয়ে দেখেন, শহরের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়ন বঞ্চিত হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি, রাজশাহীকে একটি পরিপাটি শিক্ষানগরী হিসেবে গড়ে তোলার।

 

 

 

 

 

 

অনুষ্ঠান থেকে রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে এমপি বাদশার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বাদশা বলেন, শুধুমাত্র রাজশাহী নয়, শিক্ষাক্ষেত্রে সারাদেশের টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোর প্রাসঙ্গিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! সুতরাং এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের আওতায় আনা উচিত। আগামী সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে আমি অবশ্যই রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের উন্নয়ন প্রসঙ্গটি উত্থাপন করবো। শহরের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে এগিয়ে গেছে; আশা করি আগামী দিনে টিচার্স ট্রেনিং কলেজও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত খুঁজে পাবে।
রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শওকত আলী খানের সভাপতিত্বে অভিষেক অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ব্যানার্জি। এসময় শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ কলেজের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৩ | সময়: ৯:১৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine