রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে পরামর্শ ও সিবিও কো-অর্ডিনেশন সভা

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজশাহী বিভাগের তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠির জনগণ ও তাদের সিবিও নিয়ে কো-অর্ডিনেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। চলে দুপুর পর্যন্ত। সিবিও- বাংলাদেশ, ঢাকার আয়োজনে এবং ইউএনএইডস্ বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, সমাজ সেবা অধিদপ্তর রাজশাহীর জেলা উপপরিচালক হাসিনা মমতাজ, রাজশাহী যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আলম আলী। উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দিনের আলো হিজড়া সংঘের উপদেষ্টা সাংবাদিক শরীফ সুমন, দৈনিক সানশাইন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুন, দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা, রাসিক সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ও দিনের আলো হিজড়া সংঘের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ সাগরীকা। অনুষ্ঠান সঞ্চালান ও সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন সিবিও-বাংলাদেশের গ্রোগাম ম্যানেজার মেছবাহ উদ্দিন বিরাজ।

 

 

 

 

 

 

আরো উপস্থিত ছিলেন আপোস এর নির্বাহী পরিচালক আবুল বাশার পল্টু, বাঁচার আশা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা সরকার বিজলীসহ রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকে আগত সিবিও প্রধান, কর্মকর্তা- প্রতিনিধি ও হিজড়া জনগোষ্ঠির অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত সিবিও প্রধানগণ তাদের সিবিও পরিচালনায় এবং যারা সেলাইসহ অন্যান্য কাজগুলো করতে তাদের সমস্যা দেখা দিয়েছে। একদিকে অর্থের অভাব অন্যদিকে সেলাইয়ের কাজ করতে গেলেও তাদের নিকট সাধারণ জনগণ আসছেনা। এতে তারা কর্ম করতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেন। শুধু তাইনয় আরেকটি সদস্যা প্রকোট আকার ধারন করেছে তা হলো আবাসন। শহরে ও শহরের বাহিরে তাদের বাসা ভাড়া দিতে চায়না মালিকগণ। তাদের সরকার থেকে স্থায়ীভাবে আবাসনের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন।

এই সকল সমস্য দুর করতে জেলা প্রশাসকসহ উপস্থিত বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও কর্মকর্তাদে অনুরোধ করেন তারা। সেইসাথে তৃতীয় লিঙ্গের জনগণকে সরকারী ও বেসরকারীভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য উপস্থিত অতিথিগণের নিকট দাবী জানান তারা।

উপস্থিত সিবিও নেতৃবৃন্দ ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগণের বক্তব্যের আলোকে জেলা প্রশাসক বলেন, সবাই মানুষ। কেউ এই সমাজ থেকে আলাদা নয়। আর কাউকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার এই জনগোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এতে তাদের অধিকার ফিরে এসেছে। সেইসাথে সরকারও তাদের কর্মের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন। তিনি বলেন, প্রকৃত তৃতীয় লিঙ্গেও জনগণ এই রাজশাহীতে কতজন আছেন তা চিন্হিত করতে হবে। কারন ফেক তৃতীয় লিঙ্গেও জনগণ প্রকৃতদের সুনাম ক্ষুন্ন করছে। এই সকল ব্যক্তিদের দেখা মাত্রই প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে খবর দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। সেইসাথে পৃকৃত তৃতীয় সনাক্তে ডাক্তারী পরীক্ষা করার আহ্বান জানান তিনি।

 

 

 

 

 

তিনি আরো বলেন, তিৃতীয় লিঙ্গের জনগণ আজ অনেক এগিয়ে গেছে। তাদের অধিকার সম্পর্কে তারা সচেতন হয়েছেন। অনেকেই শিক্ষিত হচ্ছেন। এই সকল শিক্ষিত তৃতীয় লিঙ্গেও জনগণের বিভিন্ন স্থানে চাকরী ও কর্মের ব্যবস্থা করতে পারলে তাদের অনেক সমস্যা কমে আসবে। তিনি বলেন, হিজড়াদের স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য শহরের মধ্যে বাড়ি ঘর করে দেয়া অনেক সময়ের ব্যাপার। তবে শহরের বাহিরে হলে খুব দ্রুত সময়ে ঘর করে দেয়া সম্ভব। যারা শহরে বসবাস করেন তারা উপজেলা পর্যায়ে গেলে ঘর করে দেয়া এবং নিজ নিজ উপজেলা সমুহের জনগণকে সরকারীভাবে ঘর নির্মাণ করে এককালিণ প্রদান করা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে তাঁর দপ্তর সবর্দা সবার জন্য উন্মুক্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৩ | সময়: ৬:৫৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine