ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি আগেই জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র

সানশাইন ডেস্ক: ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র আগেই বাংলাদেশকে জানিয়েছিল এবং এই সংখ্যাটি বড় নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দুদিন আগেই আমাদের (নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে) জানানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গতকাল (নিউ ইয়র্কে) বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আংশিক আলোচনা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় পড়া ব্যক্তিদের সংখ্যা সম্পর্কে আমাদের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্র ওই তালিকা সম্পর্কে বলতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তালিকায় কারা আছে সেটি আমরা জানতে চেয়েছি। তবে সংখ্যাটি বড় নয়, এতটুকু বলতে পারি।’
ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমরা দেখবো। প্রত্যাশা করবো, এটি যেন ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয় এবং খেয়ালখুশি মতো না হয়। কয়েকজনের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে— এখানেও প্রত্যাশা যে, সেটি যথেষ্ঠ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এটি তারা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘যদিও এটি কোনও আনন্দের অভিজ্ঞতা নয়, তবে এরমধ্য দিয়েই আমাদের যেতে হবে। একই সঙ্গে এই বার্তাটিও আছে যে— নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলো অতীতে যেভাবে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে; ভিসা নীতি ঘোষণার পরে তাদেরও কৌশলগত কিছু পরিবর্তন দেখেছি।’ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি না যে, নির্বাচনের আগে আর কোনোধরনের সেরকম বিবৃতি আপনার দেখতে পাবেন। কারণ আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, এ ধরনের স্পর্শকাতর সময়ে (ভোটের আগে) কোনও ধরনের পদক্ষেপ বা বিবৃতি নাক গলানো বলে মনে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা মনে করছে, আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। কিন্তু আরও নিষেধাজ্ঞা আসার কোনও কারণ গত দুই বছরে ঘটেছে কি? র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা আসার পরে নতুন এমন কোনও কিছু কি ঘটেছে, যার ফলে আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে? উত্তর হচ্ছে— না। এটি তো দিবালোকের মতো পরিষ্কার। কিন্তু তারপরও আপনারা এই প্রশ্নটি করছেন। এ ধরনের কথা বা ইঙ্গিত অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে… তারা না চাইলেও একটা প্রভাব ফেলতে পারে। এধরনের একটি আন্ডারস্ট্যান্ডিং থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, তারা যেন এধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন।’
প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে বাংলাদেশ কাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে এবং যেখানে কিছু ব্যত্যয় ঘটেছে; সেটির জবাবদিহির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে যে, আমাদের অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার গত ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় শুধু এতটুকু বলতে পারি, ভিসা নীতি বা গত এক-দুই বছরে যে আলোচনা প্রবাহ, এর আগেও কিন্তু অন্তত তিন জন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে। আমরা সফলতার সঙ্গে সেগুলো সমাধান করেছি।’
‘সরকারের কেউ যদি ভিসা নীতির আওতায় পড়েন এবং যখন আমরা এ বিষযে জানতে পারবো, এটি যদি আমাদের কাজের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা সৃষ্টি করে, আমরা ভবিষ্যতে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ওই নির্দিষ্ট বিষয় ও ব্যক্তিদের নিয়ে কথা বলবো।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কোনও রাষ্ট্র বা সংস্থার কোনও নাক গলানো আমরা দেখতে চাই না। প্রতিটা দেশকে এটি বলা হয়েছে। কিন্তু তারা যখন এটি ঘোষণা করেছে, আমরা এটি ভালোভাবে গ্রহণ করেছি।’


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ | সময়: ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর