সর্বশেষ সংবাদ :

আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই : প্রধানমন্ত্রী

সানশাইন ডেস্ক : আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না বলে হুশিয়ার করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মেঘের পর সূর্য ওঠে। বাংলাদেশের মানুষ অধিকার আদায় করতে জানে। বাংলাদেশ তার উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
শনিবার দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এক সুধী সমাবেশে সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন।
শেরে বাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই নাকি গণতন্ত্র চোখে দেখেন না আর গণতন্ত্র উদ্ধার করবেন। যাদের জন্মই সংবিধান লঙ্ঘন করে, উচ্চ আদালত যাদের ক্ষমতা দখল অবৈধ ঘোষণা করেছে, তাদের হাতে গড়া দল কী গণতন্ত্র দেবে? তারা গণতন্ত্র দিতে জানে না। তারপরেও তারা আন্দোলনের নামে অনেক সময় অনেক কথা বলে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঝে মাঝে অনেকেই আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে একটু ঘাবড়ে যান। তারপর আবার স্যাংশন আছে, ভিসা স্যাংশন ইত্যাদি, ইত্যাদি। আমার স্পষ্ট কথা, এই মাটি আমাদের। জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। এই সমস্ত ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অধিকার আদায় করতে জানে। তবে বাংলাদেশতো ছয় ঋতুর দেশ। কখনও বর্ষা, কখনও ঝড়, কখনও জলোচ্ছ্বাস, কখনও রৌদ্রজ্জ্বল। বিভিন্ন সময় বিভিন্নরকম দেখার আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। আজকে যারা আন্দোলনের নামে রোজই ক্ষমতা থেকে আমাদের ফেলে দিচ্ছেনৃএখানে উপস্থিত সকলকে কবির ভাষায় বলবো, ‘মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে; হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসেৃ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেঘের ঘনঘটা আমরা দেখি। তারপরতো সূর্য ওঠে। ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের জনগণ তার উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে। নৌকা সারাজীবন উজান ঠেলে ঠেলেই এগিয়ে গেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়েই নৌকা আজকে তীরে ঠেকে জনগণের উন্নয়নে কাজ করছে। নৌকা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছে। নৌকা মার্কাই স্মার্ট বাংলাদেশ দেবে। আমাদের সমাজ, অর্থনীতি স্মার্ট হবে। সেইভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস রেখে কাজ করলে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব আমর তা প্রমাণ করেছি। তারজন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। অগ্নিসন্ত্রসাস, খুন হত্যা অনেক কিছু আমরা দেখেছি। সেগুলো উত্তরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আজকে বাংলাদেশের উন্নয়ন কেন হয়েছে? ২০০৯ সাল থেকে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসে একটা গণতান্ত্রিক স্থিতিশীল পরিবেশ রাখতে পেরেছি। তার কারণেই আজকে বাংলাদেশের উন্নয়ন।’
বাংলাদেশের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগেকে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে বলেই আজকে আমাদের কারও কাছে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে যেতে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে একটা সাময়িক সমস্যা দেখা দিয়েছে। আপনারা জানেন ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ঘটনায় স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশনের জন্য আমাদের ওপর এই ধাক্কাটা এসেছে। আপনারা যদি একটু চিন্তা করে দেখেন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ আর ২০০১ থেকে ২০০৯ এই সময় যে অন্ধকার যুগে বাংলাদেশ ছিলো সেই অন্ধকারে বাংলাদেশ আজকে নেই। বাংলাদেশ এখন আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে। শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি, অর্থনেতিক উন্নতি করেছি। কর্মসংস্থানের ব্যববস্থা করেছি। এখন বেকার সমস্যা তিনভাগে নেমে এসেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে কর্মসংস্থান আরও সহজ হয়েছে।’
‘আমার কাজ একটাই, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। অন্ধকার যুগ থেকে আলোর পথে যাত্রা শুরু করা। যে ওয়াদা দিয়েছি একে একে সেই ওয়াদা পূরণ করেছি। কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই, ‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল/এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, অবকাঠামোসহ সব খাতে এই ১৫ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, আজকে বাংলাদে উন্নয়নের রোল মডেল।’
সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বাধীন ভূমিতে একটি মানুষও গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। সার্বজনীন পেনশন স্কিমের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ভবিষ্যত আর অন্ধকারে থাকবে না। আমাদের নির্বাচনী ওয়াদা ছিলো। সেই ওয়াদা রক্ষা করতে পেরেছি।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩ | সময়: ৬:০২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ