সর্বশেষ সংবাদ :

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর: নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নাটোর-৪ বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রাজনৈতিক সহচর সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি আর নেই। গত সোমবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাচ্ছিল, যার কারণে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
বুধবার সকাল ৭টা ২২ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি এক ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রী সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। আব্দুল কুদ্দুস এমপি মারা যাওয়ার খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এমপি কুদ্দুসের ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, জাতীয় সংসদের ন্যাম ভবন মসজিদে বাদ জোহর প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় ও বেলা ১২ টায় গুরুদাসপুুর বিলচলন সামসুজ্জোহা সরকারী কলেজ মাঠে তৃতীয় জানাযা শেষে তার গ্রাম বিলসায় বাদ জোহর চতুর্থ জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি প্রবীণ ও বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। ১৯৬৮-৭২ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের সভাপতি ছিলেন।
অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস রাজশাহী অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী রাজশাহী জেলায় যে ব্যক্তিকে প্রথম গ্রেফতার করে তিনি অব্দুল কুদ্দুস।
১৯৮২-৮৬ পর্যন্ত রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল কুদ্দুস। রাজশাহী মহানগর গঠিত হলে ১৯৮৬-১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য হন।
তিনি ৭ বার আওয়ামী লীগের মনোয়ন পেলেও ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৭ম জাতীয় সংসদে তিনি পশু ও মৎস্য সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি শিক্ষা সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যও ছিলেন। এছাড়া নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় বারের মতো সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।


প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৩ | সময়: ৫:২০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ